অভয়নগরে নৈশপ্রহরী হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন,দুজন আটক

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, অভয়নগর ॥ যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় ভৈরব নদ তীরবর্তী সরকার গ্রুপের ঘাটের অফিসকক্ষে নৈশপ্রহরীকে খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে যশোরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। দুদিনের ব্যবধানে ক্লুলেস এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করলেন তারা। সেই সাথে হত্যাকান্ডের জড়িত দুই যুবককে আটক করেছে পিবিআই। এছাড়া নিহত নৈশপ্রহরী মিন্টু তরফদারের দুটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করেছেন তারা।
জানা গেছে, নৈশপ্রহরী মিন্টু তরফদারের লাশ উদ্ধারের পর থেকে ছায়া তদন্ত শুরু করে পিবিআই। এরপর গত রোববার রাতে অভয়নগর থানায় নিহতের স্ত্রী জুলেখা বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পিবিআই সূত্র জানিয়েছে, মামলার সূত্র ধরে তাদের একটি টিম ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে। তারা আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নিহত নৈশপ্রহরী মিন্টু তরফদারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সন্ধান পান। সে মোতাবেক খুলনা নিউমার্কেট সংলগ্ন বাইতুন নূর জামে মসজিদ মার্কেটের স্মার্ট মোবাইল সপের কর্মচারী আব্দুল্লাহ সানাম খানের কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করেন। এরপর আব্দুল্লাহ সানামের দেয়া তথ্যমতে পিবিআই গত ২১ আগস্ট গভীর রাতে মেহেরপুরের গাংনি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত নড়াইল জেলার বিছালী ইউনিয়নের রূখালি গ্রামের ইনতাজ বিশ্বাসের ছেলে রায়হান বিশ্বাস (১৯) ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাফিজুল ইসলামের ছেলে আশিকুর রহমান (১৯) কে আটক করে। আটককৃতরা উভয়ে খুলনার ফুলতলা উপজেলার আইয়ান জুট মিলের শ্রমিক বলে পিবিআই সূত্র জানিয়েছে। এসময় তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গাংনির আতাউল সুপার মার্কেটের একটি দোকান থেকে নিহত নৈশপ্রহরী মিন্টু তরফদারের ব্যবহৃত অপর মোবাইল ফোনটিও উদ্ধার করা হয়। সোমবার আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। আটককৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পিবিআই সূত্র জানায়, তারা মোবাইল ফোন চুরির উদ্দেশ্যেই নৈশপ্রহরী মিন্টু তরফদারকে খুন করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই যশোরের এসআই মিজানুর রহমান হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ আসামি আটক ও মোবাইল ফোন উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটককৃত দু’জনই এলাকায় ছিচকে চোর হিসেবে পরিচিত। তারা চুরির পরিকল্পনা করে নৈশপ্রহরী মিন্টু তরফদারের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে। এক পর্যায়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় তারা দু’জনই নিহত মিন্টু তরফদারের সাথে ঘাটের অফিস কক্ষে রাত কাটাতে চায়। মিন্টু তরফদার রাজি হলে তারা রাত নয়টায় ওই অফিস কক্ষে যায় এবং দীর্ঘসময় গল্প করার পর ঘুমিয়ে পড়ার ভান করে। এক পর্যায়ে মিন্টু ঘুমিয়ে পড়লে তারা তাকে হত্যা করে মোবাইল ফোন দুটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার তালতলা এলাকায় আকিজ জুট মিলের সামনে সরকার গ্রুপের ঘাটের অফিসের ভেতর থেকে নৈশপ্রহরী মিন্টু তরফদারের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত মিন্টু তরফদার অভয়নগর উপজেলার চেঙ্গুটিয়া বুড়োর দোকান এলাকার মৃত মুসা তরফদারের ছেলে।