অভয়নগরে ১১ বছরের শিশুকে জোর করে বিয়ে অতঃপর ধর্ষণ মামলা আটক ২

0

স্টাফ রিপোর্টার, অভয়নগর॥ যশোরের অভয়নগর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে নাবালিকা স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ স্বামী হাফিজুর রহমান ও কাজী রুহুল আমিনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে অভয়নগর থানা পুলিশ ৩৫ বছর বয়সী হাফিজুর রহমানকে ১১ বছর বয়সী নাবালিকা শিশুকে জোর পূর্বক বিয়ে করে ধর্ষণের অভিযোগে আটক করেছে এবং কাজী নওয়াপাড়া আল হেলাল ইসলামি একাডেমির ধর্মীয় শিক্ষক রুহুল আমিনকে বাল্য বিয়েতে সহায়তার অভিযোগে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় নাবালিকা শিশুটির মা বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় মামলা করেছেন। যার মামলা নং ০২। তাং ০২-০৮-২০২২ ইং। শিশুটি স্থানীয় একটি স্কুলের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে, নওয়াপাড়া পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড বুইকরা গ্রামে। অভিযুক্ত বর হাফিজুর রহমান(৩৫) একই গ্রামের জগবাবুর মোড় এলাকার মৃত শাহ্ আলমের ছেলে। তার স্ত্রী ও ৯ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মামলার অভিযোগে নাবালিকা শিশুটির মা মিল শ্রমিক রিক্তা বেগম জানান, হাফিজুর প্রায়ই তার নাবালিকা শিশু কন্যাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিতো। কিন্তু মেয়ে নাবালিকা হওয়ায় এবং হাফিজুরের স্ত্রী ও সন্তান থাকায় তিনি রাজি হননি। এক পর্যায়ে হাফিজুর পরিবারসহ তাদের বাড়িতে দাওয়াত দেয়। গত ১৫ জুলাই বাদী ও তার নাবালিকা শিশুটিসহ খালা-খালুকে নিয়ে হাফিজুর রহমানের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যান। সেখানে ভিকটিমসহ বাদী ও বাদীর খালু নূর ইসলাম এবং খালা হনুফা বেগমকে একটি ঘরে আটক করে রাখে। কিছু সময় পর স্থানীয় আল-হেলাল ইসলামি একাডেমির ধর্মীয় শিক্ষক রুহুল আমিন ওই ঘরে প্রবেশ করেন। এসময় ফের তার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি রাজি হননি। পরে ওই ধর্মীয় শিক্ষক প্রতারণা করে শিশু কন্যাটির কাছে গিয়ে জোর করে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেন। পরবর্তীতে আসামি হাফিজুরসহ অন্যরা বাদীর মেয়ের হাফিজুরের সাথে বিয়ে হয়ে গেছে বলে জানায়। এ সময় বাদীসহ বাদীর খালু-খালাকে ঘর থেকে বের করে দেয় এবং কাউকে বিষয়টি জানালে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। ঘটনার ৫দিন পরে নাবালিকা শিশু কন্যাটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে একটি ভ্যানে করে বাদীর বাড়ির পাশে রেখে সটকে পড়ে।
বাদীর অভিযোগ, হাফিজুর তার শিশু কন্যাকে আটকে রেখে জোরপূর্বক পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। বাদী তার মেয়েকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ হওয়ার পর গত ২৮ জুলাই এ ঘটনার বিচার চেয়ে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন।
অভয়নগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানজিলা আখতার বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে অভয়নগর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পরে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত হাফিজুর রহমান ও রুহুল আমিনকে আটক করে।
অভয়নগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ এ কে এম শামিম হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।