চাঁদাবাজির প্রতিবাদে চাঁচড়া পোনা বাজারে ধর্মঘট শুরু

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চাঁদাবাজদের হাত থেকে রক্ষা পেতে যশোর শহরের চাঁচড়া বাবলাতলা পোনা ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট শুরু করেছেন।  মঙ্গলবার সকাল থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের ডাক দেন। প্রতিবাদে আজ বুধবার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেবেন মাছ ব্যবসায়ীরা।
চাঁচড়া বাবলাতলা মৎস্য উৎপাদন বিপণন সমবায় সমিতির সভাপতি কাজী তৌহিদ মোল্যা বলেন, দীর্ঘদিন এখানে প্রায় আড়াইশ মাছ ব্যবসায়ী মাছের পোনা বিক্রি করে আসছেন। ভরা মৌসুমে প্রতিদিন এই বাজার থেকে মাছের পোনা বেচাকেনা কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। এই বাজার থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় এসব পোনা যায়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করতে এসে চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ তারা। স্থানীয় রায়পাড়ার নূর ইসলাম নুরু, সাইফুল ইসলাম, মশিয়ার, শংকরপুরের মতি, হৃদয়, পুলের হাটের সাব্বিরসহ একদল সন্ত্রাসী প্রায়ই তাদের বাজারে এসে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা দাবি করে আসছে বলে তিনি জানান। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলেই তারা নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেয়। এ অবস্থায় প্রতিকারের জন্য ব্যবসায়ীরা ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে তারা ব্যবসা বন্ধ করে ধর্মঘট পালন করেন। একই কথা বলেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম দুলাল। তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের কারণে বাজারে ব্যবসায়ীরা শান্তিতে ব্যবসা করতে পারছেন না। বিষয়টি প্রশাসনকে বলেও কোনো কাজ হয় না। বাধ্য হয়ে সোমবার ওই চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সাথে আমরা বসেছিলাম। সেখানে কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই তপন নন্দীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এসেছিল। বৈঠক চলাকালে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর চড়াও হয়।’ তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে বুধবার যশোর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে। এরপর কোনো প্রতিকার না হলে আরও কঠোর আন্দোলনে যাওয়া হবে বলে তিনি জানান।
কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ীর অভিযোগ, চাঁদাবাজরা তাদের ইচ্ছেমত কিছু লোককে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা নিয়ে এই বাজারে বসায়। ১০-১৫ দিন পর ফের তাকে উঠিয়ে নতুন করে আরেকজনের কাছ থেকে সমপরিমাণ বা বেশি টাকা নিয়ে তাকে বসিয়ে দেয়। সম্প্রতি এই চাঁদাবাজদের নতুন নতুন অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ। মাছ ব্যবসায়ীরা বলেন, অবিলম্বে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তারা এই বাজারে আর মাছ বিক্রি করেবেন না।
এ বিষয়ে পুলিশের এসআই তপন নন্দী তিনি বলেন, ‘সোমবার ওই এলাকায় যশোর পৌরসভার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম চলছিলো। এজন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়টি মাথায় রেখে সেখানে আমি পুলিশের একটি দল যাই। বিকেলে বাজারের ব্যবসায়ীরা বৈঠকে বসেন। সেখানে তারা সমিতির সদস্য ছাড়া বহিরাগত কেউ বাজারে ব্যবসা করতে পারবেন না বলে আলাপ-আলোচনা করেন। তবে চাঁদাবাজি বা সন্ত্রাসী কোনো কর্মকান্ডের জন্য ওই সভা ডাকা হয়েছিল কিনা তা আমার জানা নেই।’