চৌগাছায় ১৯ মাসের শিশুর হার্ট ছিদ্র

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ ছোট্ট শিশু সাইমুম হাসান। বয়স মাত্র ১৯ মাস। ৬ মাস বয়সে সে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর হর্টে দু’টি ছিদ্র ধরা পড়ে। এরপর চলে চিকিৎসা। দীর্ঘ ১৩ মাস চিকিৎসা করতে গিয়ে গরিব আব্বা-মার সব শেষ । কিন্তু আজও ভাল হয়নি বুকের ধন কলিজার টুকরো সন্তান সাইমুম হাসান। তার সুচিকিৎসায় অনেক টাকার প্রয়োজন যা দরিদ্র আব্বা-মার পক্ষে সংগ্রহ করা একেবারেই অসম্ভব। তাই শিশু সন্তানের চিকিৎসায় তারা সমাজের বৃত্তমানদের কাছে সাহায্যের আকুতি জানিয়েছেন।
চৌগাছা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বেলেমাঠ মহল্লার বাসিন্দা দিনমজুর রাশেদ আলী। নিজের ভিটেবাড়ির ৫ শতক জমি ছাড়া কিছুই নেই তার। পরের জমিতে কাজ করে যা রোজগার করেন তাতেই চলে সংসার। রাশেদ- রাজিয়া দম্পত্তির একমাত্র সন্তান সাইমুম হাসান। জন্মের পর হতেই শিশু সাইমুম হাসান ছিল খুবই চঞ্চল প্রকৃতির। কিন্তু সাইমুমের বয়স যখন ৬ মাস তখন সে স্বাভাবিক খাওয়া, ঘুমানো এমনকি খেলাধুলা করা বন্ধ করে দেয়। পিতা- মাতা শিশুকে নিয়ে ছুটে যান চিকিৎসকের কাছে। নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার পর শিশুটির হার্ট ছিদ্র বলে জানান চিকিৎসক। তারপর হতে বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিকে একাধিকবার পরীক্ষা করা হয়। বারবার হার্ট ছিদ্র বলে জানান চিকিৎসকরা। চৌগাছা, যশোর এমনকি ঝিনাইদাহ জেলার বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসাসেবা নিয়েছে। সর্বশেষ শিশু সাইমুম হাসানকে দেখেছেন যশোর মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক (শিশু বিভাগ) ডা. ইমদাদুল হক রাজু। চিকিৎসক শিশুটির পিতা -মাতাকে জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় ধারে চিকিৎসা করে যেতে হবে। অল্প বয়স তাই নিয়মিত চিকিৎসা করলে সে এক সময় সুস্থ হয়ে উঠবে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে যাওয়া আসা, পরীক্ষা নিরীক্ষা ও ওষুধ ক্রয়ে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। নেই কোন সঞ্চয়, নেই কোন সম্পদ। তাই বর্তমানে শিশুটি আর চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। লোকমুখে কথা শুনে ছুটছেন নানা কবিরাজের কাছে। কবিরাজে তদবিরই এখন শেষ ভরসা হয়ে উঠেছে।
সরেজমিন শিশু সাইমুম হাসানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দাদির কোলে শুয়ে আছে সাইমুম হাসান। চোখে চোখ পড়তেই মায়াবি চেহারায় এক পলোক তাকিয়ে আবার চোখ বন্ধ করে। দেখে মনে হয় অনেক ক্লান্ত সে। কথা হয় শিশু সাইমুমের মা রাজিয়া সুলতানার সাথে। তিনি বুকের ধন ছোট্ট শিশু সন্তানের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। বলেন, আমরা গরিব। পরের ক্ষেতে জোনে না গেলে চুলায় হাড়ি উঠে না। সেই ঘরে এত বড় রোগ। কিভাবে ছেলেকে চিকিৎসা করবো সেই চিন্তায় দিশেহারা।
রাজিয়া সুলতানা আরও বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। যা আমাদের পক্ষে জোগাড় করা একেবারেই অসম্ভব। তারপরও নানাভাবে টাকা জোগাড় করিয়েছি।
শিশু সাইমুম হাসানের পিতা রাশেদ আলী বলেন, শিশুটির মুখে একটু হাসি দেখতে আমি কষ্ট করে যাচ্ছি। টাকার অভাবে এখন ডাক্তারের কাছে যেতে পারিনা। ১৯ মাস আগে ঘর আলোকিত করে পৃথিবীর আলো দেখে আমার সাইমুম। আজ সে কঠিন রোগে আক্রান্ত। তার সুচিকিৎসায় অসহায় পিতা মাতা সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের আকুতি জানিয়েছেন। যোগাযোগ-০১৭৫৪৪৩৪৮০৭।