ভয়াবহ বিদ্যুৎ সঙ্কটে পাকিস্তান, খাদ্য সঙ্কটও বাড়ছে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ পরিস্থিতি সামলাতে গত দু-তিন মাস ধরেই দৈনিক কয়েক ঘণ্টার বিদ্যুৎ-ছাঁটাই (ব্ল্যাক আউট) চলছিল পাকিস্তানে। সেই ব্ল্যাক আউটের সময়সীমা ক্রমশ বাড়তে বাড়তে এখন দৈনিক গড়ে ১২ ঘণ্টায় এসে পৌঁছেছে। ঠিক যেমন দেখা গিয়েছিল আড়াই মাস আগে সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত আর এক দেশ শ্রীলঙ্কায়। পরিস্থিতির অবনতি হলে ব্ল্যাক আউটের সময়সীমা আরও বাড়তে পারে বলে ইতিমধ্যেই পাকিস্তান সরকারের তরফে ‘বার্তা’ দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানজুড়ে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সঙ্কটের একাধিক কারণের মধ্যে রয়েছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, ডলারের তুলনায় পাকিস্তানি মুদ্রার ক্রমাগত দাম কমা এবং ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা। সঙ্কটের পরিস্থিতিতে জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কয়েক বছর আগে ইতালি এবং কাতারের দুটি সংস্থার সঙ্গে গ্যাস সরবরাহের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করেছিল ইসলামাবাদ। কিন্তু সঙ্কটের সময় তারা চুক্তিমাফিক জ্বালানি সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে এমন পরিস্থিতি আর কখনো আসেনি বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১৩.৮ শতাংশে। শুধু বিদ্যুৎ নয়, মূল্যবৃদ্ধি এবং অপ্রতুল জোগানের কারণে সে দেশে খাদ্যের সঙ্কটও ধীরে ধীরে বাড়ছে। দেশে কৃষকদের সমস্যা দূর না করা হলে পাকিস্তানকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হবে বলে সোমবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাবেক পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকার সঙ্কট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয়েছিল। আইএমএফের তরফে বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি ছাঁটাইয়ের শর্ত দেওয়া হয়েছে।
ওদিকে, শর্ত খেলাপের অভিযোগে ইতালি এবং কাতারের দুই সংস্থার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দরবার করেও শরিফ সরকারের তেমন লাভ হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ইতালির সংস্থাটি ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, যুদ্ধের কারণে ইউরোপে জ্বালানির সঙ্কট তৈরি হয়েছে। তাই পাকিস্তানকে শর্তমাফিক জ্বালানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।