চৌগাছায় সড়ক নির্মাণে অনিয়ম দেখে কাজ বন্ধ করলেন স্থানীয়রা

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় একটি সরকারি রাস্তা পাকাকরণে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি পাকাকরণে সরকারি কোন নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে স্থানীয়রা মঙ্গলবার সকালে সড়কের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
উপজেলা আড়পাড়া মোড় হতে কান্দি বাজার পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা বছরের পর বছর এলাকাবাসীর গলার কাঁটায় রূপ নেয়। বর্ষা মৌসুমে হাট সমান কাদা আর খরা মৌসুমে ধুলাবালিতে একাকার। স্থানীয়দের কষ্টের কথা বিবেচনা করে কয়েক বছর আগে সড়কের কিছু অংশ ইটের সলিং করা হয়। সেই সলিংও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সরকার সড়কটি পাকাকরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। চৌগাছার প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার মুকুল মিয়া সড়ক পাকাকরণের কাজ পান। ইতোমধ্যে সড়ক খুঁড়ে বালি পানি দিয়ে প্রাথমিক কাজও সম্পন্ন করেন। বর্তমানে চলছে ইটের খোয়া তৈরির কাজ চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ সড়কের কাজে যে ইট ব্যবহার করা হচ্ছে তা ইটভাটার সব থেমে ন্মিমানের ইট। এই ইট দিয়ে সড়কটি তৈরি করা হলে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই নষ্ট হয়ে যাবে। সে কারণে মঙ্গলবার সকালে সড়কের কাজ বন্ধ করে দেন স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিন দেখা যায়, গোটা সড়কটি ঘিরেই স্থানীয় নানা বয়সের নানা শ্রেণি পেশার মানষের জটলা। তাদের একটিই দাবি, কোনভাবেই খারাপ (আমা) ইট দিয়ে সড়কটি তৈরি করা যাবে না। প্রয়োজনে কাজ বন্ধ থাকবে। বিগত দিনে কষ্ট হয়েছে। তারা আরও কষ্ট করতে রাজি। এ সময় কথা হয় আড়পাড়া গ্রামের বজলুর রহমান, মাহিন আলম, পান্নু মিয়া, শহিদুল ইসলাম, কান্দি গ্রামের ইকরাম হোসেন,রফিকুল ইসলাম, বাবুর সাথে। তারা জানান, কান্দি আড়কান্দি, মির্জাপুর, জগদীশপুর, স্বর্পরাজপুরসহ একাধিক গ্রামের শ শ মানুষ এই সড়কটি দিয়ে বারবাজার হাটসহ জেলা শহর যশোর ও ঝিনাইদাহতে যাতায়াত করেন। কষ্ট ভোগ করে তাদের প্রতিনিয়ত চলাচল করতে হচ্ছে। বিশেষ করে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের কষ্ট সব থেকে বেশি। এরই মধ্যে সড়কটি পাকাকরণের খবরে মানুষের মাঝে স্বস্তি আসে। আর কাজ শুরু হলে সকলের মাঝে ঈদের আনন্দ দেখা দেয়। কিন্তু ঠিকাদার সড়কটি থেকে অধিক লাভের আশায় আমা ইট দিয়ে কাজ শুরু করেছেন। এই ইট দিয়ে কোনভাবেই সকড়ের কাজ করা যাবে না। তাই আমরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।
আড়পাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, শুনেছি সড়কটি ২ কোটি টাকা দিয়ে নির্মিত হচ্ছে। অনেক কষ্টের পর মানুষ আসার আলো দেখতে শুরু করে। কিন্তু নির্মাণ কাজে যে অনিয়ম হচ্ছে তা সহজে মেনে নেয়া যায়না। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন তিনি।
সড়ক নির্মান কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার মুকুল মিয়া বলেন, ইটভাটার শ্রমিকরা কৌশলে সেখানে খারাপ ইট রেখে এসেছে। বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। কিন্তু মঙ্গলবার এ ঘটনা জানার পর সমুদয় ইট তুলে আনার কথা বলেছি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী রিয়াদ সাত ইমতিয়াজ বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর ঠিকাদারকে দ্রুত ডেকে পাঠাই। ঠিকাদার এক দিনের সময় নিয়েছেন। নষ্ট ইট তুলে সেখানে ভাল ইট দিয়ে কাজ হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।