চৌগাছার জমজমাট পানের হাট

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছার পানহাট এ অঞ্চলের বৃহৎ পান হাটে পরিণত হয়েছে এমন অভিমত অনেকের। জেলার বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা উপজেলার পান চাষিরা হাটে পান বিক্রি করেন। পান হাটকে আরও প্রাণবন্ত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে পৌর কর্তৃপক্ষ ও হাট মালিকরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। চৌগাছার হাটের পান নিজ এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা উপজেলায় যাচ্ছে বলে জানান পানচাষি ও হাট কর্তৃপক্ষ।
চৌগাছা-মহেশপুর সড়কে পশুহাটের পাশেই স্থাপিত এ অঞ্চলের বৃহৎ পানহাট। সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার হাটে পান বেচা কেনা হয়। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল এমনকি বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে চাষিরা সকাল থেকেই পান নিয়ে ছুটে আসেন হাটে। নির্ধারিত সময়ে শুরু হয় কেনাবেচা।
শুক্রবার পান হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা বিক্রেতার সরব উপস্থিতি। বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে ব্যবসায়ীরা পিকআপ ভ্যান, ইজিবাইকসহ নানা যানবাহনে হাটে হাজির হয়েছেন।
এ সময় কথা হয় বাগেরহাট জেলার সদর উপজেলার বাসিন্দা সোহেল রানা, জ্যেতিন্দ্র নাথ দে, যশোরের শার্শা উপজেলার উত্তম দেবনাথ, বেনাপোলের অশোক মৌলিক, চৌগাছার মানিক কুমারসহ একাধিক ব্যবসায়ীর সাথে। ব্যবসায়ীরা জানান, এ অঞ্চলের মধ্যে চৌগাছার পান হাট থেকে পান কিনে সব থেকে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এই হাটে বিপুল পরিমাণে পান আসে, তুলনামূলক দামও কম থাকে। যে কারণে সুদুর বাগেরহাট থেকে এখানে আমরা পান নিতে আসি। চৌগাছা হাটের ঝাল জাতের পান খুবই ভাল এবং এই পানের চাহিদা বেশি থাকে, তাই অন্য জাতের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা ঝাল জাতের পান কিছুটা বেশি ক্রয় করেন।
পানচাষি উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আজাদুর রহমান, সুখপুকুরিয়া গ্রামের মহাসিন আলী, মির্জাপুর গ্রামের অনিল কুমার, বহিলাপোতা গ্রামের আমিনুর রহমান, বেড়গোবিন্দপুর গ্রামের বাবুল আক্তার, রামভাদ্রপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ জানান, পানচাষ একটি ব্যয়হুল চাষ হলেও প্রচুর টাকা আছে এই চাষে। একবার বরজ তৈরি করে কয়েক বছর ধরে ওই বরজের পান বিক্রি করা যায়। বহিলাপোতা গ্রামের পান চাষি আমিনুর রহমান বলেন, ২০০৯ সালে দেড় বিঘা জমিতে পান চাষ করেন। আজও পানের বরজ সেই একই রকমের আছে। বর্তমানে পানের দাম নিম্নমুখি তাই টাকা কম হয়, গেল ফাল্গুনে তিনি প্রায় আড়াই লাখ টাকার পান বিক্রি করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সমরেন বিশ্বাস বলেন, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিচ্ছিন্নভাবে পান চাষ হলেও সুখপুকুরিয়া, ধুলিয়ানী, স্বরুপদাহ ইউনিয়নে বেশি পান চাষ হচ্ছে। বর্তমানে ৮০ হেক্টর জমিতে কৃষক ঝাল, এলসি, ভাবনাসহ নানা জাতের পান চাষ হয়েছে বলে তিনি জানান।
চৌগাছা পৌর মেয়র নুর উদ্দিন আল মামুন হিমেল বলেন, পানহাট যেহেতু পৌরসভার ভেতরে, তাই তিনি মাঝে মাঝে আকস্মিকভাবে হাটে যান এবং সকলের সাথে কথা বলেন।