যশোরে প্রতিপক্ষের নির্যাতনে আহত যুবকের মৃত্যু,জড়িতরা আটক হয়নি

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে প্রতিপক্ষের নিষ্ঠুর নির্যাতনে গুরুতর আহত ইরিয়ান গাজী (২৩) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। একইদিন সকালে সদর উপজেলার সুজলপুরে তাকে ধরে এনে প্রকাশ্যে নির্যাতন চালানো হয়েছিলো। তবে পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে এখনো পর্যন্ত আটক করতে পারেনি।
নিহত ইরিয়ান গাজী সুজলপুর এক নম্বরপাড়ার খোরশেদ গাজীর ছেলে। কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই বিমান তরফদার জানান, গত ২০ মে শুক্রবার সকালে সুজলপুরে ইরিয়ানের মোটরসাইকেলের সাথে একটি ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ভ্যানে বসেছিলেন একই এলাকার মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে সাকিব। এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরিয়ান ও সাকিবের মধ্যে সেই সময় বাকবিত-া হয়। এরই জের ধরে সন্ধ্যায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে আহত হন সাকিব। এ জন্য ইরিয়ানসহ তার পক্ষীয় লোকজনকে দায়ী করা হয়। এছাড়া সাকিবকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ইরিয়ান ও তার ৩ ভাইসহ ৭ জনকে আসামি করে একইদিন গভীর রাতে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা হয়। সাকিবের মা আরিফা বেগম মামলাটি করেন। তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে কৃষ্ণবাটিতে গিয়ে আত্মগোপন করেন ইরিয়ান।
এ খবর পেয়ে গত শনিবার সকালে সাকিব পক্ষীয় সুজলপুরের গোলাপ, বুদো, মিঠু ও শরীফসহ ২০/২২ জন কৃষ্ণবাটিতে ইরিয়ানকে ধরে আনেন। তারা তাকে বেধড়ক মারধর করে। সুজলপুর মোড়ে এনে প্রকাশ্যে তাকে মারধরসহ নিষ্ঠুর নির্যাতনের কারণে ইরিয়ান গুরুতর আহত হন। বেলা ১১টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ তাকে ঘটনাস্থলে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পায়। এ সময় পরিবারের লোকজন সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ইরিয়ানকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক ইরিয়ানকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। রাত ১১টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইরিয়ানের মৃত্যু হয়। তিনি আরও বলেন,মৃত্যুর খবর পেয়ে গত শনিবার রাতে অভিযুক্তদের ধরতে সুজলপুরে অভিযান চালানো হয়েছিলো। তবে জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি।
কোতয়ালি থানা পুলিশের ইনসপেক্টর (তদন্ত) শেখ মো. মনিরুজ্জামান জানান, যুবককে হত্যার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এজাহার দাখিলের প্রস্তুতি চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়,হত্যার সাথে জড়িত গোলাপ ও শরীফসহ অন্যরা সুজলপুরের আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ আশ্রিত। তারা সুজলপুরের স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসে নিয়মিত ওঠাবসা করে থাকেন। সূত্র জানায়, শরীফের সাথে ইরিয়ানের আগে থেকেই শত্রুতা ছিলো। সাকিবকে ছুরিকাঘাত করায় এরই সুযোগ নিয়ে শরীফ গং ইরিয়ানকে ধরে এনে বেধড়ক মারধর করে। যার কারণে মারা যান ইরিয়ান।