কেশবপুরে বোরো ধান পাকার আগেই ব্লাস্টের আক্রমণ : কৃষক দিশেহারা

0

জয়দেব চক্রবর্ত্তী, কেশবপুর (যশোর) ॥ কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বোরো ধানের ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ হয়েছে। এতে ধানের পাতা হলুদবর্ণ ধারণ করে চিটা হয়ে যাচ্ছে। ছত্রাকনাশক ছিটিয়েও ধান রক্ষা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর কেশবপুরে সাড়ে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে ব্লাস্টের সংক্রমণ হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের হিসাবের সঙ্গে বাস্তবে মিল নেই বলে দাবি করেছেন অনেক কৃষক। তাঁদের মতে, আ রও জমিতে ব্লাস্টের সংক্রমণ হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বাগদা, মজিদপুর, দেউলি, পরচক্রা, অগরহাটি, ভরত ভায়না, বরনডালী, মুলগ্রাম, ভোগতী নরেন্দ্রপুর, হাসানপুর, বুড়িহাটি, মঙ্গলকোট এলাকায় ক্ষেতের ধান নষ্ট হয়েছে।
উপজেলার বাগদা গ্রামের আবদুল জলিল মোড়ল, মফিজুর রহমান সানা, হাবিবুর রহমান, দেউলি গ্রামের আজিজুর রহমান বলেন, ব্লাস্ট রোগে তাদের প্রায় ১২ বিঘা জমির ইরি বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে। আগরহাটি গ্রামের কৃষক ফয়জার মোড়লের তিন বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, অনেক কষ্ট করে বোরো ধান করেছিলেন। ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাঁর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একই গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমানের দুই বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। সামনে কী খাবেন তা নিয়ে তিনি এখন চিন্তিত।
বাগদা গ্রামের কৃষক আবদুল জলিল মোড়ল বলেন, ৩ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে চিটা পড়ে গেছে। এ ধান দিয়ে কিছু হবে না। অনেকবার ছত্রাকনিক স্প্রে করেও কোন লাভ হয়নি।
এ ধানের বিচালিও গরু খেতে চায় না। ভোগতি গ্রামের কৃষক শওকত আলী বলেন, কয়েকবার ছত্রাকনাশক ছিটিয়েও ধান রক্ষা পায়নি। ব্লাস্টের সংক্রমণের ভয়ে অনেকে কাঁচা ধান কেটে ফেলছেন। তাতে ফলন কমে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ব্রি-২৮ পুরোনো জাতের ধান। এ জাতের ধানে ব্লাস্টের সংক্রমণ বেশি হয়। তাঁরা কৃষকদের এ জাতের ধান লাগাতে নিরুৎসাহিত করেন। দিনে তাপমাত্রা বেশি, রাতে ঠান্ডা ও সকালে শিশির পড়ার কারণে ব্লাস্টের সংক্রমণ বেশি হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, এ বছর ব্লাস্টের সহায়ক পরিবেশ বিরাজ করায় কৃষকদের প্রথম থেকেই সচেতন করা হয়েছে। ছত্রাকনাশক ছিটাতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে এই রোগের সংক্রমণ অনেক কম হয়েছে। বাজারে ছত্রাকনাশক ভেজাল রয়েছে। সেগুলো ব্যবহার করায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।