রোজায় আনারসের দাম বেড়েছে তিনগুণ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ রমজান মাসের শুরু থেকেই রাজধানীর বাজারগুলোতে বিভিন্ন ফলের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি বেড়েছে আনারসের দাম। ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাসে ভরপুর এ ফলটির দাম বেড়ে এক লাফে প্রায় তিনগুণ হয়েছে।
আনারসের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন যে আনারস পাওয়া যাচ্ছে তা আগাম আনারস। রোজায় বিভিন্ন ফলের পাশাপাশি আনারসের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু রসালো এ ফলটির সরবরাহ বাড়েনি। এ কারণে দাম বেড়েছে। সামনে আনারসের সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে।
বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুচরা ব্যবসায়ীরা ছোট আনারসের পিস বিক্রি করছেন ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, যা রোজার আগে ছিল ১০ থেকে ১৫ টাকা। মাঝারি আকারের আনারসের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা রোজার আগে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
রামপুরায় ভ্যানে আনারস বিক্রি করা মো. হেলাল বলেন, রোজার আগে ছোট এই আনারসের পিস বিক্রি করেছি ১০ টাকা। এখন আড়ত থেকেই আমাদের কিনতে হচ্ছে ২০ টাকার ওপরে। হুট করে আনারসের এমন দাম বাড়ায় আমরাও অবাক।
তিনি বলেন, দাম বাড়লেও আনারসের বিক্রি কমেনি। প্রতিদিন যে আনারস আনি ইফতারির আগেই বিক্রি হয়ে যায়। আগে ২০০-২৫০টি আনারস বিক্রি করতে সকাল থেকে রাত হয়ে যেত। এখন সন্ধ্যার আগেই তিনশ আনারস বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
খিলগাঁওয়ে আনারস কিনতে আসা দিদারুল আলম বলেন, এক পিস আনারসের দাম চাচ্ছে ৮০ টাকা। এটা কী মগের মুল্লুক হয়ে গেলো। আগে তো আনারসের এতো দাম দেখিনি। হুট করে কী এমন হয়ে গেলো আনারসের দাম বাড়বে। আসলে যে যেমন পারছে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে মুনাফা লুটে নিচ্ছে।
তিনি বলেন, শুধু আনারস নয়, বাজারে সব ফলের দামই বাড়তি। ২০০ টাকার নিচে আপেল পাওয়া যাচ্ছে না। মাল্টার কেজি ১৮০ টাকা। কমলার কেজি ২০০ টাকা। ফলের এমন দাম হলে মানুষ খাবে কীভাবে?
বাদামতলীতে পাইকারি আনারস বিক্রেতা হাসিবুর রহমান বলেন, এখানে আনারসের দাম প্রতিদিন ওঠানামা করে। মালের সরবরাহ ও চাহিদার ওপর দাম নির্ভর করে। তবে আমরা এখন ১০০ আনারস দুই থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি করছি। খুচরায় কতো দামে বিক্রি হচ্ছে তা বলতে পারবো না।
এদিকে রোজার আগে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আপেলের কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। এছাড়া রোজার আগে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া কমলা এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা।
আপেল, কমলা ও মাল্টার দামের বিষয়ে বাদামতলীর ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম বলেন, রোজায় আপেল, কমলা ও মাল্টার দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে খুব বেশি বাড়েনি। কেজিতে ১০-১৫ টাকার মতো বেড়েছে। আসলে এখন আপেল, কমলা, মাল্টার সরবরাহ কম। এটাই দাম বাড়ার কারণ।
অন্যদিকে, বিভিন্ন ফলের দাম বাড়লেও রোজায় তরমুজের দাম কমেছে। রোজার আগে খুচরা পর্যায়ে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া তরমুজ এখন ৪০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। রোজার আগে আড়তে ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া তরমুজ এখন তিনশ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে।
তরমুজের দামের বিষয়ে বাদামতলীর ব্যবসায়ী মো. শহিদুল বলেন, এখন তরমুজের ভরা মৌসুম। তরমুজের সরবরাহ যেমন বেড়েছে, তেমনি এখনকার তরমুজ বেশ পরিপক্ব। এই তরমুজ লাল ও মিষ্টি। তবে তরমুজ বাজারে খুব বেশি দিন পাওয়া যাবে না। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে দেখবেন তরমুজ শেষ হয়ে গেছে।