যৌতুক মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৪ জনকে কারাগারে প্রেরণ যশোরে

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে সুপ্রিয়া ঘোষ নামে এক নারীর দায়ের করা যৌতুক সংক্রান্ত মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তা স্বামী, ননদ ও ননদের স্বামীসহ ৪ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক নিলুফার শিরীন তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী সুব্রত ব্যানার্জী। আত্মসমর্পণকারী আসামিরা হলেন-গোপালগঞ্জের ভেন্নাবাড়ি গ্রামের মৃত অনিল কৃষ্ণ বিশ্বাসের ছেলে সাতাপাড় জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা অনিরুদ্ধ বিশ্বাস, তার মা কনিকা বিশ্বাস, বোন সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা সাথী বিশ্বাস ও বোনের স্বামী অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তা কার্তিক মন্ডল।
মামলার বাদী সুপ্রিয়া ঘোষ যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের গোবিন্দ ঘোষের মেয়ে। ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর সুপ্রিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-১ আদালতে মামলা করেন। মামলায় বিবরণে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি অনিরুদ্ধ বিশ্বাসের সাথে সুপ্রিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় অনিরুদ্ধ ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। বাধ্য হয়ে নগদ ৫ লাখ টাকা ও ৮ ভরি ওজনের সোনার গহনা দেয়া হয়। কিন্তু বিয়ের কয়েকদিনের মাথায় ফের ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য সুপ্রিয়ার ওপর নানা ধরণের অত্যাচার শুরু করেন অনিরুদ্ধ। এ কারণে তাকে ফের ২ লাখ টাকা দেন সুপ্রিয়ার পিতা। কয়েকদিন পর অপর আসামিদের প্ররোচণায় ফের যৌতুকের জন্য সুপ্রিয়াকে নির্যাতন শুরু করেন অনিরুদ্ধ। এক পর্যায়ে ২০২১ সালের ৯ অক্টোবর নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে সুপ্রিয়ার জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এরপর সুপ্রিয়ার পরিবারের লোকজন অনিরুদ্ধকে যশোরে আসতে বলেন। গত বছরের ২৯ অক্টোবর অনিরুদ্ধসহ অন্য আসামিরা যশোরে আসেন। কিন্তু তারা ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় সুপ্রিয়াকে বেধড়ক মারপিট করে তারা যশোর থেকে চলে যান। পরে পরিবারের লোকজন আহত সুপ্রিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সুস্থ হওয়ার পর সুপ্রিয়া উল্লিখিতদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডি পুলিশকে আদেশ দেন। তদন্তে সিআইডি পুলিশ অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এর প্রেক্ষিতে আসামিরা সোমবার যশোরে আদালতে আত্মসমর্পণ এবং জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।