আমি নিজেও ইভিএম ভালো করে বুঝি না: সিইসি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দেশের আগামী দিনের নির্বাচন ব্যবস্থায় বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) থাকবে কি থাকবে না, এ প্রসঙ্গে প্রথম কার্যদিবসেই নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করেছেন নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ইভিএম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে সেটি এখনই বলতে পারছি না। আমরা ইভিএমের ভালো-মন্দ নিয়ে আলোচনা করবো। পাশাপাশি ব্যালটের ভালো-মন্দটাও আমরা দেখবো। পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। আমি নিজেও ইভিএম ভালো করে বুঝি না। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে গণমাধ্যমের সঙ্গে ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, আমরা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আইনগুলোও পর্যাপ্ত কি না, সেটি দেখবো। নির্বাচন পরিচালনায় আমরা গুরুত্ব দেবো। আমরা সেনসেটাইজ করবো। পর্যবেক্ষণও করবো। জাতীয় বা স্থানীয় যে কোনো পর্যায়ে ‘নির্বাচনের মাঠ উত্তপ্ত’ উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড কমিশন একা তৈরি করতে পারে না। পলিটিক্যাল লিডারশিপ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি মিলিয়েই কিন্তু হয়। আমরা যদি মুখ ফিরিয়ে থাকি তাহলে দূরত্ব বাড়বে। রাজনৈতিক দলগুলোর কাউকে না কাউকে অহংকার বাদ দিয়ে আলোচনায় আসতে হবে। গণতন্ত্র সুসংহত করতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দেশের সব রাজনৈতিক দল অংশ নেবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। একইসঙ্গে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার কমিশনের দায়িত্ব বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সিইসি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা রয়েছে। নির্বাচনে অনেক (দলের) কর্মী থাকে, সেখানে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মাঠ ছেড়ে গেলে হবে না, মাঠে থাকতে হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পালিয়ে যেতে পারতেন, কিন্তু প্রতিরোধ গড়ে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ভোট হবে ভোটের নিয়মে। আগের রাতে ভোট হতো কি না জানি না। আমি অস্ট্রেলিয়ায় বসে দিনে ভোট দিতে দেখেছি। আমি জানি সেটি হয় কি না। তবে আমরা সেদিকে যেতে চাই না। যদি দেখেন আমরা সেটি করেছি তখন বলতে পারেন। যদি মানুষের আস্থা বিনষ্ট হয় তাহলে সেটি ফেরানোর চেষ্টা কি আমরা করবো না? আমাদের আপনারা পর্যবেক্ষণে রাখেন, আমরা তো সেখানে বাধা দেবো না। ভোটকেন্দ্রে কোনো সহিংসতা বা সংঘাতে জড়াবে না- রাজনৈতিক দলগুলো এমন চুক্তিতে আসতে পারে। নির্বাচন আয়োজনে বিএনপির আস্থা অর্জনের বিষয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, বিএনপি যদি ঘোষণা দিয়েও থাকে (ভোটে না আসার বিষয়ে), তাদের কি আহ্বান জানাতে পারবো না? কোনো কিছুই শেষ নয়। আমরা তো তাদের চা খেতে আমন্ত্রণ জানাতেও পারি।
কমিশন পরিচালনায় আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আজ আমাদের প্রথম দিনের বৈঠক ছিল পরিচয় পর্বের। আমরা সবাই বলেছি, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবো। এখনো মূল্যায়নের সময় আসেনি। সময় এলে আপনারাই (সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে) মূল্যায়ন করবেন কতটুকু দায়িত্বহীন ছিলাম এবং কতটুকু দায়িত্বতার সঙ্গে কাজ করেছি। ব্রিফিংকালে নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান এবং ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।