মুকুলের ঘ্রাণে হেমন্তের আগমণী বার্তা

0

নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোর)॥ অভয়নগরে আমের গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে হলুদ রঙের আমের মুকুল। প্রতিটি গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। সদ্য বিকশিত সে মুকুল থেকে ছড়াচ্ছে ঘ্রাণ আর আম বাগানে মৌমাছির আনা গোনা ও গুন গুন গানে মুখরিত। এ সব দৃশ্যে এ অঞ্চলে আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন এলঅকায় ৪ শ হেক্টর জমিতে বেড়ে ওঠা ১৫ হাজার গাছের মালিকেরা। কৃষি বিভাগও মনে করে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আর চাষিদের পরিচর্যায় ব্যাহত না হলে এবার আমে বাম্পার ফলন হতে পারে।
জানা গেছে, উপজেলার সারি সারি আম গাছের বাগানগুলো হলুদ আর সবুজের মহামিলনে চমৎকার দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। মুকুল ধরা ছড়িয়ে পড়া ডালগুলো দোল খাচ্ছে বাতাসে। সে দোলায় রঙিন হচ্ছে আম চাষি আর বাগান মালিকের স্বপ্ন। চারদিকের বাতাসে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত ঘ্রাণ। সে ঘ্রাণ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের অগ্রীম আগমনী বার্তা জানাচ্ছে আমের মুকুল। আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর বলে জানাচ্ছেন আম চাষি ও গাছ মালিকেরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন অভয়নগর উপজেলার বাগান মালিকরা। বাগান মালিকরা জানান, মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছ গুলোতে। উপজেলার ধোপাদী, সরখোলা, শংকরপাশা, একতারপুর, চলিশিয়া, প্রেমবাগ, চেঙ্গুটিয়াসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। যেদিকে চোখ যায় গাছে গাছে এখন শুধু দৃশ্যমান মুকুলের আভা। মৌমাছিরাও আসতে শুরু করেছে মধু আহরণে। অভয় নগর অঞ্চলে প্রিায় প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে আমের গাছ। তাছাড়া ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে উঠেছে অনেক আমা বাগান। সারি সারি গাছ এবং গ্রামে মাঝে মাঝে বাগান। এ সব জায়গায় কেশি বিদেশি বিভিন্ন জাতের আম গাছ রয়েছে। এর মধ্যে আম্রপালি, হিমসাগর, গোপালভোগ, ফজলি জাতের আমও রয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েকদিন লাগবে বলে জানান বাগান মালিক সাদ্দাম হোসেন, তরিকুল ইসলাম। বাগান মালিক সবুজ হাসান, জিয়া হাসান, জহুর মোল্যা বলেন, বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে মুকুলের পরিমান বেশি। তাদের দাবি, প্রতিদিন বিভিন্ন আম বাগান তারা পরিদর্শন করছেন। এখনও কোনো বাগানে সমস্যা দেখা যায়নি। এ বছর এখনো ঘন কুয়াশা না থাকায় মুকুল নষ্ট হয়নি। তাছাড়া পোকা দমনে বালাইনাশক স্প্রে করছেন। সেই সাথে সালফার জাতীয় ছত্রাক নাশক স্প্রেও করেছেন। তাদের মতে, শুরু থেকে মুকুলের পরিচর্যা করতে পারলে এবার আমের ফলন বাম্পার হবে। হপার পোকা মুকুলের কচি অংশের রস চুষে খেয়ে বেঁচে থাকে। এ জন্য মুকুল সবুজ থাকা অবস্থায় কীটনাশক স্প্রে করে থাকেন তারা।
অভয়নগর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সামদানী জানান, উপজেলার ৪ শ হেক্টর চমিতে ৪৫ টি আম বাগান রয়েছে। এখানে গাছের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার, এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে দুই চারটি আম গাছ রয়েছে। কৃষি বিভাগের তে সব কিছু ঠিক থাকলে প্রতি হেক্টরে ১৫ থেকে ২০ টন আম পাওয়া যাবে।
কৃষি বিখাগ আরো জানায়, ফুল ফোটার সময় ও আমের গুটি হওয়ার সময় পোকা দমনে বালাইনাশক স্প্রে করতে পরার্মশ দেওয়া হচ্ছে চাষিদের। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। আমের বাম্পার ফলনের আশায় সব রকম তথ্য ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে কৃষি বিভাগ।