গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জাপার

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ জ্বালানি মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি।মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলে দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে বর্তমান পেক্ষাপটে মহা বিপর্যয় ডেকে আনবে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মূল্য বৃদ্ধির এই অর্থ দেশের প্রতিটি মানুষের কাছ থেকে আদায় করা হবে। যা মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলবে। মেগা প্রজেক্টের বিপুল ব্যয় স্থগিত রেখে হলেও এ মুহুর্তে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসতে হবে।’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘করোনার এ সময়ে গ্যাসের মূল্য বাড়ানো জনবিরোধী হটকারী সিদ্ধান্ত। সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিলে প্রমাণ হবে দেশের মানুষের প্রতি কোনো দরদ নেই। সম্প্রতি বাংলাদেশের গ্যাস উৎপাদন কোম্পানীগুলো বর্তমান মূল্যের চেয়ে দ্বিগুণ বাড়িয়ে গ্যাসের মূল্য পূনঃনির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে।
‘বর্তমানে পাইপলাইনে সরবরাহকৃত গ্যাসে দুই চুলার জন্য গ্রাহককে মাসে ৯৭৫ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তাতে দুই চুলার মাসিক বিল বেড়ে দাঁড়াবে দুই হাজার ১০০ টাকা। একই সঙ্গে আবাসিক গ্রাহকদের ঘন মিটার প্রতি ৯ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা ৩৫ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শিল্প কারখানায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আবার সার ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৪ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা ৬৬ পয়সা প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে হোটেল রেস্তোরাঁয় ২৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সিএনজিতে ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।”
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘গ‌্যাসের দাম বাড়লে রপ্তানি পণ্যের উৎপাদন ব্যায় বেড়ে যাবে। তাতে হুমকির মুখে পড়তে পারে দেশের গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বায়িং প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ ফেরাতে পারে বাংলাদেশ থেকে। যা মহা বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। তাই এসময় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হবে হটকারী ও দুঃখজনক।’
নিয়মিত গ্যাসের বিল পরিশোধ করার পরও কয়েকমাস ধরে রাজধানীতে গ্যাস না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ‘‘দিনেরাতে লাইনে গ্যাস নেই। ঠিকমত রান্নাবান্না করা যাচ্ছে না। কেউ কেউ অতিরিক্ত খরচ করে কেরোসিন বা সিলিন্ডার গ‌্যাস ব্যবহার করছে।
‘মহামারি করোনাকালে কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে। ইতোপূর্বে তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে জীবনযাত্রার ব্যায় বেড়েছে কয়েকগুণ। তাই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য দিনে দিনে আকাশচুম্বি হয়ে উঠেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ।’