লোকসমাজ ডেস্ক॥ মোংলা বন্দরের জন্য নতুন দুটি টাগবোট সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশসহ টাগবোট দুটি সরবরাহ করবে হংকং ভিত্তিক চেওয় লী শিপইয়ার্ডস লিমিটেড।
এজন্য সর্বমোট ব্যয় হবে ২২২ কোটি ৮৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা।
সূত্র জানায়, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নাধীন মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ শীর্ষক প্রকল্পিটি ৭৬৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।
প্রকল্পের অধীনে পাঁচটি প্যাকেজের মাধ্যমে ছয়টি জলযান সংগ্রহের অংশ হিসেবে প্যাকেজ নং-জি-২ এর আওতাধীন দুটি টাগবোট সংগ্রহ করা হবে। ডিপিপিতে দুইটি টাগবোটের ক্রয়কাজ উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্র পদ্ধতি উল্লেখ ছিল। পরবর্তীতে পিপিআর-২০০৮ এর বিধি ৮৪ ক(২) অনুযায়ী হোপ-এর অনুমোদনক্রমে একধাপ দুই খাম পদ্ধতিতে অনুসরণ করা হয়েছে। ক্রয় পরিকল্পনায় জি-২ প্যাকেজের বিপরীতে ২৩৩ কোটি ৪ লাখ টাকার সংস্থান রয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে দরপত্র আহ্বান করা হলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মোট ১৭টি দরপত্র দলিল সংগ্রহ করে। দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত দিনে একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। দরপত্র উন্মুক্ত করা ও মূল্যায়নের লক্ষ্যে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ৭ সদস্যের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) গঠন করে।
দরপত্রে একমাত্র অংশগ্রহনকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে হংকং ভিত্তিক চেওয় লী শিপইয়ার্ডস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির স্থানীয় এজেন্ট বাংলাদেশের ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
সূত্র জানায়, দরপত্র খোলার পর দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) দরপত্র মূল্যায়ন করে। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি যথাযথভাবে প্রচারের ফলে ১৭টি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দরপত্র দলিল ক্রয় করে। তবে একটি দরপত্র জমা পড়ায় দরপত্রে প্রতিযোগিতার বিষয়ে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি বিশদ পর্যালোচনা করে। পিপিআর-২০০ এর উপবিধি ৯৮(৩০) অনুযায়ী একটি দরপত্র জমা পড়লেও দরপত্রের সব শর্ত পূরণ হলে, উদ্বৃত মূল্য প্রাক্কলিত মূল্যেও কাছাকাছি এবং বাজার মূল্যেও সমতুল্য হলে বিবেচনা করা যায়।
মোংলা বন্দরের চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে টাগবোটের জরুরি প্রয়োজন থাকায় কমিটি বিস্তারিত পর্যালোচনা শেষে কতিপয় বিষয় ক্লারিফিকেশন চাওয়ার পক্ষে মতামত/সুপারিশ করে। সে অনুযায়ী দরদাতা প্রতিষ্ঠান চেওয় লী শিপইয়ার্ড লিমিটেড-এর পাঠানো জবাব পর্যালোচনায় টেন্ডারের সব শর্ত পূরণ করায় তাদের দরপ্রস্তাব কমিটি কারিগরিভাবে রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচনা করে যা হোপ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ায় উক্ত প্রতিষ্ঠানের দাখিল করা আর্থিক প্রস্তাব খোলা ও পরবর্তীতে পরীক্ষা কর হয়।
সূত্র জানায়, হংকং ভিত্তিক চেওয় লী শিপইয়ার্ডস লিমিটেড দরপত্রে সিডি, ট্যাক্স, ভ্যাটসহ ২২২ কোটি ৮৯ লাখ ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা দর উল্লেখ করে। যা প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ৩.৪০ শতাংশ কম। ফলে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি দরপত্রের সব বিষয় যাচাই-বাছাই করে প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে প্রস্তাবিত টাগবোট দুটি ক্রয়ের জন্য সুপারিশ করেছে।
দরপ্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।