কালীগঞ্জে ৮০ বছর ধরে গরুর গাড়ি তৈরির পেশায় আব্দুল মজিদ

0

শিপলু জামান, কালীগঞ্জ( ঝিনাইদহ) ॥ ১৯৪০ সালে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কালীগঞ্জে এসে আব্দুল মজিদ শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে গরুরগাড়ি তৈরির কারখানা গড়ে তোলেন। তার দেখাদেখি একই এলাকা হতে অনেকেই এসে এই পেশায় যোগ দেন। উপজেলাজুড়ে ৫০টিরও অধিক জায়গায় এই কারখানা ছিলো। কিন্তু দীর্ঘদিনের এই পেশায় এখন আর ভাগ্যের চাকা ঘোরে না তাদের। বাধ্য হয়ে অনেকে পাল্টিয়ে ফেলেছেন তাদের বাপ-দাদার পেশা।
কালক্রমে দেশের রাস্তায় নামতে থাকে স্থানীয়ভাবে তৈরি নসিমন, করিমন, ভটভটি, লাটাহাম্পার ও স্টিয়ারিং নামের ইঞ্জিনচালিত নানা বাহন। এসব শক্তিশালী যানবাহনের দাপটে রাস্তায় আর দেখা মেলে না গরু,মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ি। বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়া চাকা তৈরির কারিগর আবদুল মজিদ এখন বৃদ্ধ। জীবনে সচ্ছলতা না আসলেও অকৃত্রিম ভালোবাসায় ছাড়তে পারেননি এই পেশা। দুই-একটা কাজ থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই ছেলে-মেয়ে নিয়ে থেকে গেছেন।আব্দুল মজিদ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এটা আমার বাপ-দাদার পেশা। একসময় গরুরগাড়ির চাকা তৈরির প্রচুর চাপ ছিল। তবে এখন আর কোন চাহিদা নেই বললেই চলে। তবুও এই পেশাকে ভালবেসে পড়ে আছি। এই পেশা ছেড়ে যেতে মণ চাই না। দু-একটি চাকা তৈরির অর্ডার পাই। এতেই কোনরকম টিকে আছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জানান, ‘আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। তাই আগে সকল কাজে গরুরগাড়ির কোন বিকল্প ছিল না। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ার যন্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে। ফলে গরু মহিষের গাড়িগুলো এখন আর ব্যবহৃত হচ্ছে না। তবে এটা আমাদের ঐতিহ্য। এটাকে টিকিয়ে রাখা দরকার।’