মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে সুপেয় পানির বুথ

0

স্টাফ রিপোর্টার, মনিরামপুর (যশোর) ॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে রোগীসহ সাধারণের জন্য সুপেয় খাবার পানির যখন তীব্র সঙ্কট, তখন জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা)’র অর্থায়নে স্থাপন করা হয়েছে সুপেয় পানির বুথ। বুথের তিনটি ট্যাব থেকে এখন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীসহ সাধারণ মানুষ চাহিদামত সুপেয় পানি সংগ্রহ করছেন। অপরদিকে স্থাপন করা হয়েছে হাত ধোয়ার জন্য পৃথক একটি বুথ। বুথের বেসিন থেকে লিকুইড সাবান দিয়ে হাত ধোয়া হচ্ছে। আর এটি বাস্তবায়নে রয়েছে বেসরকারি সংস্থা এশিয়া আর্সেনিক নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ। তবে সুপেয় খাবার পানি সরবরাহ ও হাত ধৌত প্রকল্পে জাইকার বরাদ্দের পরিমান সম্পর্কে সুনিদ্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগ থেকে প্রতিদিন সাড়ে চার/পাঁচ’শ রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। অধিকাংশ রোগীর সাথে আবার তাদের স্বজনরাও এসে থাকেন। কিন্তু বিপত্তি ঘটে সুপেয় পানির ক্ষেত্রে। কারণ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে মাত্র একটি গভীর ও একটি অগভীর নলকূপ। এই নলকূপ থেকে খাবার পানি সরবরাহ করা হয় শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ (ওয়ার্ড) রোগী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস ও আবাসিকে। মাঝে মধ্যে বহির্বিভাগে একটি ফিল্টারের মাধ্যমে খাবার পানি সরবরাহ করা হতো। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সেটি ছিল অত্যন্ত অপ্রতুল। ফলে বহির্বিভাগে খাবার পানির চরম সঙ্কট দেখা দেয়। যে কারণে দীর্ঘদিন ধরে পানি নিয়ে রোগীসহ সাধারণের মধ্যে দেখা দেয় চরম অসন্তোষ। করোনাকালীন সময়ে বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাওয়ায় পানি সঙ্কট আরো চরম আকার ধারণ করে। এক পর্যায়ে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা) স্বাস্থ্য কমপ্লে´ের বহির্বিভাগে সুপেয় পানি সরবরাহ ও হাত ধৌতের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। জাইকার অর্থায়নে এশিয়া আর্সেনিক নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ গত মার্চ মাসে বহির্বিভাগের সামনে সুপেয় পানি সরবরাহ ও হাত ধৌতের জন্য কাজ শুরু করে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বুধবার সকাল ১১ টায় সরেজমিন দেখা যায়, বহির্বিভাগের সামনে পানি সরবরাহ ও হাতধৌতের বুথের সামনে রোগিদের বেশ ভীড়। এ সময় কথা হয় শ্যামকুড় থেকে আসা রফিকুল ইসলাম ও রোজিনা খাতুন নামে দুই রোগির সাথে। তারা জানান, বহির্বিভাগে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পিপাসায় ভুগছিলেন। তারা বোতলে করে এই বুথ থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। আবার রোহিতা থেকে আসা গৃহবধু মরিয়ম বেগম, হালিমা খাতুন খাবার পানি সংগ্রহের পর অপর প্রান্তের বেসিন থেকে সাবান পানি দিয়ে হাত ধৌত করে ভেতরে প্রবেশ করছেন চিকিৎসাকের কাছে। পানির বুথের সামনে থাকা উপস্থিতিরা জানান, দীর্ঘদিন পর খাবার পানি সংগ্রহের জন্য বুথ স্থাপন করায় তাদের বেশ উপকার হয়েছে। বহির্বিভাগে দায়িত্বরত এশিয়া আর্সেনিক নেটওয়ার্কের স্বাস্থ্য সহায়ক রেজাউল করিম ও শাহানাজ পারভীন জানান, বহির্বিভাগে প্রবেশের আগে বেসিন থেকে রোগীদের হাত ধৌত করার বিষয়টি নিশ্চিত হবার পর শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অনুপ কুমার বসু জানান, বহির্বিভাগের সামনে সুপেয় পানি সংগ্রহ ও সাবান পানি দিয়ে হাত ধৌতের ব্যবস্থা করায় রোগিদের জন্য অত্যন্ত ভাল হয়েছে। তবে খাবার পানি সংগ্রহ ও হাত ধৌত প্রকল্পে জাইকার বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমান সম্পর্কে প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা এশিয়া আর্সেনিক নেটওয়ার্কের পানি সরবরাহ প্রকৌশলী জয়নুল জামান জানান, বরাদ্দ সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, পানি সরবরাহ ও হাত ধৌত প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্দকৃত অর্থ সম্পর্কে তাকে কেউ অবহিত করেননি।