অবশেষে পুলিশ প্রশিক্ষণের ডাক পেলেন ভূমিহীন মিম

0

খুলনা সংবাদদাতা॥ সাধারণ নারী কোটায় মেধা তালিকায় প্রথম হয়েও জমি না থাকায় পুলিশে চাকরি পাচ্ছিলেন না মিম আক্তার। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে অবশেষে পুলিশ কনস্টেবল পদে ট্রেনিংয়ের (প্রশিক্ষণ) জন্য ডাকা হয়েছে মিমকে। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর খুলনা টেক্সটাইল মিল পুলিশ ফাঁড়ি থেকে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিকাইল প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের নোটিশপত্রটি মিমের হাতে তুলে দেন। এর আগে গত ১১ ডিসেম্বর খুলনা পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে মিমকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, পুলিশ ভেরিফিকেশনে স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় মেধা তালিকায় প্রথম হলেও চাকরিটি তাকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ খবরে মিমের পরিবারে দুশ্চিন্তা ভর করে। বিষয়টি রাইজিংবিডিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন মিম। তাকে নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে শুরু করে পুলিশ বিভাগ। পাশে দাঁড়ান খুলনা জেলা প্রশাসকও।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিম আক্তার খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ৩ নম্বর আবাসিক এলাকার ১ নম্বর রোডে ডাক্তার বাবর আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া। ২০১৯ সালে নগরীর পিডব্লিউডি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৪ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। মিমের বাবা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমার পৈতৃক বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থানার বড়বাড়িয়া গ্রামে। অভাব-অনটনের কারণে ১৯৮৮ সাল থেকে স্ব-পরিবারে খুলনায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছি। খুলনার বয়রা ক্রস রোডে ‘বেডিং হাউজ’ নামে আমার লেপতোশকের একটি দোকান রয়েছে। মিমের জন্মও খুলনাতে। তিনি আরও বলেন, এখানে আমাদের কোনো স্থায়ী জমি না থাকায় মিমের চাকরিটা হচ্ছিল না। তবে সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতায় পুলিশের ট্রেনিংয়ের জন্য ডাকা হয়েছে মিমকে। শুক্রবার সন্ধ্যার পর টেক্সটাইল মিল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মিকাইল আমাকে ও মিমকে ডেকে একটি নোটিশ দিয়েছেন। এদিকে, ট্রেনিংয়ে ডাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েছেন মিম আক্তার। তিনি বলেন, পুলিশের দায়িত্ব পালনকালে যদি কখনও অসহায় মানুষ সামনে আসে তবে তার প্রতি আমার সহমর্মিতা অবশ্যই থাকবে। তাদের পাশে দাঁড়াব। খুলনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহম্মেদ জানান, পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় মেধা তালিকায় প্রথম হয় মিম আক্তার। তবে পুলিশ ফেরিফিকেশনে স্থায়ী ঠিকানা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। আমরা ঘটনাটি পুলিশ হেড কোয়ার্টারকে জানাই। অবশেষে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের নির্দেশনায় মিমের আবেদন আমরা গ্রহণ করেছি। ট্রেনিংয়ের জন্য মিমকে ডাকা হয়েছে। ট্রেনিং শেষে মিম চূড়ান্ত নিয়োগপত্র পাবেন।