১৪ বছর পর যশোরে এইডস সংক্রমণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে : মৃত্যু ১ আক্রান্ত ১

0

বিএম আসাদ ॥ যশোরে মরণব্যাধি এইডসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমে গেছে। চলতি বছর একজন আক্রান্ত ও একজন মৃত্যুবরণ করেছেন ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত, এইডসে ১শ ৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর ভেতর ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৪ বছরের মধ্যে এ বছর আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা সর্বনিম্ন। জেলা এইডস কমিটির কর্মকর্তা আবিদুর রহমানের দেয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, চলতি বছর (২০২১ সালে) ৬ হাজার ১১শ ৪৫ জন এইচআইভি ভিসিটি পরীক্ষা করা হয়েছে। এর ভেতর একজন মহিলার শরীরে এইডস ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং এইডসে আক্রান্ত একজন পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এইডসে আক্রান্তের সংখ্যা কমে গেছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান। পরিসংখ্যান অনুযায়ি ২০২০ সালে ১০ জন এইডসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই বছর ৪ হাজার ২শ ৬৫ জনের ভিসিটি পরীক্ষা করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে ভিসিটি পরীক্ষা করা হয়েছিল ৭শ ১৮ জনের। এর ভেতর আক্রান্ত হয়েছিলেন ১০ জন। ২০১৮ সালে ৭শ ৪২ জনের ভিসিটি পরীক্ষা করে ৬ জন এইডসে আক্রান্ত হন। ২০১৭ সালে ৯শ ৩১ জনের ভিসিটি পরীক্ষা করা হয়। আক্রান্ত হন ৮ জন। ২০১৬ সালে ৯শ ২২ জনের পরীক্ষা করা হলে ১৩ জনের শরীরে এইডস শনাক্ত হয়।
২০১৫ সালে ১ হাজার ১শ ৪৩ জনের শরীরে ভিসিটি পরীক্ষা করে ৩ জনের শরীরে এইডসে শনাক্ত হয়। ২০১৪ সালে ৯শ ৩২ জনের ভিসিটি পরীক্ষা করে ২৩ জনের শরীরে এইডস ভাইরাস শনাক্ত হয়। ২০১৩ সালে ৯শ ৮৪ জনকে পরীক্ষা করে এইডস শনাক্ত হয় ৮ জনের। ২০১২ সালে ৯শ ৩৪ জনকে পরীক্ষা করা হয়। ওই বছর ৯ জনের শরীরে এইডসের জীবাণু পাওয়া যায়। ২০১১ সালে ৮শ ২৫ জনকে পরীক্ষা করে ৬ জন, ২০১০ সালে ৯শ ৪৫ জনকে পরীক্ষা করে ৭ জন এবং ২০০৮ সালে ৮শ ১ জনকে ভিসিটি পরীক্ষা করে ২ জনের শরীরে এইডস শনাক্ত হয়, ২০০৯ সালে ৭শ ৬০ জন ২০০৭ সালে ৮শ ১১ জন ও ২০০৬ সালে ৭শ ২৫ জনকে ভিসিটি পরীক্ষা করা হলেও কারো শরীরে এইডস ভাইরাসের সন্ধান মেলেনি। ২০০৬ সাল থেকে সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) সমন্বয়ে গঠিত হয় জেলা এইডস কমিটি ওই কমিটির উদ্যোগে যশোরে এইডস প্রতিরোধে কার্যক্রম শুরু হয়।
পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত যশোর জেলায় মোট ২২ হাজার ৫শ ৮৩ জনকে এইডস নির্ণয়ের জন্য ভিসিটি পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে এইচআইভি পজেটিভ (এইডস) বা এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন ১শ ৩৬ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ জন। মৃতদের ভেতর ৬ জন পুরুষ ও ৫ জন মহিলা। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, এফপিএবি যশোর শাখা, লাইট হাউজ, নারী মুক্তি সংঘ, পায়াকট-বাংলাদেশ, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ব্র্যাক, বঞ্চিতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা, শক্তি উন্নয়ন সংস্থা, আশার আলো সোসাইটি ও অর্পণ মানব কল্যাণ সংস্থা মিলে মোট ১১টি সংস্থা যশোরে এইডস প্রতিরোধে কাজ করছে। ১ ডিসেম্বর পালিত হবে বিশ্ব এইডস দিবস। যশোর সিভিল সার্জন অফিস ও যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে এ নিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন র‌্যালি ও আলোচনা সভার মাধ্যমে মানুষকে এইডসের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করা হবে।