মনিরামপুরে নৌকার কর্মীদের বিরুদ্ধে নৈরাজ্যের অভিযোগ এনে বিদ্রোহী মনির প্রার্থিতা প্রত্যাহার

0

স্টাফ রিপোর্টার, মনিরামপুর (যশোর) ॥ যশোর মনিরামপুরের শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনিসহ তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। তবে, এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার মনিরামপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মনিরুজ্জামান মনি নৌকার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক মারমৃুখি আচরণসহ বিভিন্ন নৈরাজ্যের অভিযোগ এনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষনা দেন। পরে তিনি রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন জমা দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। মনি’র প্রত্যাহারের পর অপর দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে নৌকার প্রার্থী আলমগীর হোসেনের আর কোন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেন না।
গতকাল দুপুরে বিদ্রোহী প্রার্থী শ্যামকুড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান।
লিখিত বক্তব্যে মনিরুজ্জামান মনি জানান, ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসী বিষয়টি সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেননি। ফলে তাদের চাপের মুখে তিনি নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) প্রার্থী হন। তিনি অভিযোগ করেন, তার আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে নৌকার প্রার্থী আলমগীর হোসেনের নির্দেশে তার কর্মী-সমর্থকরা এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দেয়। ফলে এলাকাবাসীর মাঝে দেখা দেয় চরম আতঙ্ক। এছাড়াও নৌকার কর্মী-সমর্থকরা তার কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হামলাসহ ব্যাপক মারপিট করাসহ জীবননাশের হুমকি দেয়। সন্ত্রাসীদের হামলায় রায়হান উদ্দিন, আবদুর রউফ, গালিব হোসেন, অমল দাস, সজিব হাসান, হাবিবুর রহমান, তাজ উদ্দিনসহ অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হন। ইতিমধ্যে তার বেশ কয়েকজন কর্মী সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়ে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের সময় বিদ্রোহী প্রার্থী মনিকে বেশ উদ্বিগ্ন ও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তে দেখা যায়। বক্তব্যের সময় তিনি বার বার চোখ মুছছিলেন। পরে নিজেকে কিছুটা সামাল দেওয়ার পর আবারও আবেগপ্রবণ হয়ে কান্নাকাটি করে অত্যন্ত ঘৃণা এবং ক্ষোভের সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী মনি জানান, নৌকার কর্মী-সমর্থকদের ধারাবাহিক মারমুখি আচরণ ও নৈরাজ্যের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় পুরো ইউনিয়নে সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দেয়। ফলে নিজের পরিবার, কর্মী-সমর্থকসহ ইউনিয়নবাসীর নিরাপত্তার কথা ভেবে এবং দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে তিনি নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষনা দেন। পরবর্তীতে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসানকে সাথে নিয়ে রিটার্নিং অফিসার উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মাসুদ হোসেনের চেম্বারে গিয়ে লিখিত আবেদন জমা দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। এদিকে এ খবর প্রচার হলে দুপুরের পর একে একে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন অপর দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী আনসার আলী ও ডা. মনিরুজ্জামান। অবশ্য প্রত্যহারের সত্যতা নিশ্চিত করেন রিটার্রিং অফিসার মাসুদ হোসেন। এর ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে নৌকার প্রার্থী আলমগীর হোসেনের আর কোন বাধা রইল না।