ঝিনাইদহে ইউপি নির্বাচনে আলোচনায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ॥ আসন্ন ইউপি নির্বাচনে ঝিনাইদহে আলোচনায় এখন ৩ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। জেলা ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়া এই ৩ নেতাকে হেবিওয়েট প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। নেতৃত্ব তৈরিতে এবার ইউপি নির্বাচনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা দলীয় ফোরামে আলোচনায় রয়েছে। সারাদেশে অনপ্রবেশকারীদের ভীড়ে আশাজাগানিয়া হিসেবে দেখছেন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেসি কলেজের সর্বশেষ জিএস আতিকুল হাসান মাসুম সদর উপজেলার ৬ নং গান্না ইউনিয়নে প্রার্থী হবেন বলে নিজেকে প্রস্তুত করছেন। দিন রাত এলাকায় পরিশ্রম করছেন। যাচ্ছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। জনসভা ও গনসংযোগের মাধ্যমে মাসুম গান্না ইউনিয়নে পরিচিতি লাভ করেছেন। অবশ্য তার পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে ইউনিয়নটিতে। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শিমুল ১০ নং বগুড়া ইউনিয়নে নির্বাচন করবেন বলে প্রস্তুত হচ্ছে। নেতৃত্বের দক্ষতা তাকে অনেক আগেই পরিচিত করেছে মানুষের কাতারে। জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে সামলাচ্ছেন অনেক দায়িত্ব। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাকিল আহমেদ ১৩ নং উমেদপুর ইউনিয়নে ভোট করবেন বলে প্রচার শুরু করেছেন। তারুন্য দীপ্ত নেতৃত্ব গড়তে তার কাতারে অনেকেই সামিল হচ্ছে। ৫নং কাচেরকোল ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন জোয়ার্দার মামুন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসন্ন নির্বাচনে কাঁচেরকোল ইউনিয়ন থেকে মননোয়ন চাচ্ছেন। জেলা ছাত্রলীগের নেতা শাহাবুদ্দিন সাবুসহ শৈলকুপা উপজেলা ছাত্রলীগের জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, এনজিও কর্মী টিএ রাজু, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, জুলফিকার আলী কায়সার টিপু ও মোস্তফা হোসেন। হরিণাকুন্ডুু উপজেলার ৩ নং তাহেরহুদা ইউয়নিয়নে নৌকার মনোনয়ন চান ফিরোজ সালাউদ্দিন। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। দৌলতপুর ইউনিয়নে মনোনয়ন চান মাজেদুল হক তিনি জেলা ছাত্রলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন, হরিণাকুন্ডু উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম দৌলতপুর ইউনিয়ন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাচ্ছেন। উপজেলার ফলসি ইউনিয়নে মনোনয়ন চাচ্ছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাজু এবং জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাসেল হোসেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ১৫ নং কালীচরণপুর ইউনিয়নে মনোনয়ন চাচ্ছেন ঝিনাইদহ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসাইন। এছাড়াও সদর উপজেলায় অনেকেই রয়েছেন যারা ইউনিয়ন পর্যায়ে ছাত্রলীগ করেছেন। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনেই ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসা। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের বয়স্ক জ্যেষ্ঠ নেতারা বয়সের ভারে শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। দক্ষ নেতৃত্ব তৈরী ও দলের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখতে হলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের মুল্যায়ন এখন জরুরী বলেও ানেকে মনে করেন। ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সহভাপতি তৈয়ব আলী জোয়ার্দার বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর ও ২০০১ সাল পরবর্তী ছাত্রলীগের রাজনীতি খুব কঠিন ছিল। এই দুই সময়ে যারা ছাত্রলীগ করেছে তাদের জিয়া, এরশাদ ও বিএনপি সরকারের নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা সহ্য করতে হয়েছে। এখন জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতা প্রবীণ হয়েছেন ছাত্রলীগ থেকে আসা পরীক্ষিতদের আওয়ামী লীগে নিয়ে আসতে হবে। জনপ্রতিনিধি তৈরি করতে হবে। ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেসি কলেজের জিএস আতিকুল হাসান মাসুম বলেন, এখন অনেকেই সোনার চামচ মুখে দিয়ে ছাত্রলীগ করছেন। আমরা ক্ষমতার মুখ দেখতে পারিনি। ২০০১ সালের পরে জেলায় যেখানেই খুন-খারাপি হোক আমরা আসামি হয়েছি। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আহাদুর রহমান খোকন বলেন, ১৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের নাম বললেই অত্যাচার করা হতো। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেও ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগের পরাজয় হয়। ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগের প্রথম বিজয় ছিল সরকারি কেসি কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে। এখন সময় এসেছে পরীক্ষিত নেতাদের মুল্যায়ন করা। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক ও কেসি কলেজের এজিএস শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী ইউপি নির্বাচনে কোন অনুপ্রবেশকারী, সরকারী অনুদান বিক্রয়কারী, আওয়ামী লীগ ও সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী যেন নৌকার মনোনয়ন না পায়।