সংবাদ সম্মেলনে বাঘারপাড়া আ.লীগের সম্পাদক: রণজিৎ রায় এমপি এক জন দুর্নীতিবাজ ও সুবিধাভোগী নেতা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায়ের কারণেই বাঘারপাড়া আওয়ামী লীগে রাজাকারদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. হাসান আলী। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রেস ক্লাব যশোর মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রণজিৎ রায় এমপি একজন দুর্নীতিবাজ ও সুবিধাভোগী নেতা। তিনি তার ব্যক্তিস্বার্থে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের সুযোগ না দিয়ে বিতর্কিতদের জায়গা করে দিচ্ছেন। যে কারণে দলের নেতাকর্মীরা একে একে তাকে ছেড়ে যাচ্ছেন। বাঘারপাড়ার রায়পুর ইউনিয়নে রাজাকারের সন্তানের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করতে এসে তিনি এ কথা বলেন। বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও রায়পুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বিল্লাল হোসেন। এরপর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধার একাংশ তাকে রাজকারপুত্র আখ্যা দিয়ে মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিল্লালের বাবা মোহাম্মদ আলী ছিলেন তৎকালীন ইউনিয়ন পিচ কমিটির চেয়ারম্যান। তার ছেলে কটা মোশারেফ উপজেলা আল বদর বাহিনীর সামরিক কমান্ডার এবং আরেক ছেলে শাহাদত ছিলেন আল শামস ইউনিয়ন কমিটির নেতা। মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রত্যক্ষ মদদে বিল্লালকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও দলের নেতাকর্মীরা তার পদ প্রত্যাহারের কয়েক দফা এমপির কাছে দেন দরবার করা হলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি। বরং তিনি দলের আদর্শ ও চেতনাকে উপেক্ষা করে সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান আলী বলেন, রায়পুরে রাজাকারপুত্রের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। তবে যদি পরিবর্তন না হয় তাহলে আমরা রায়পুরে রাজাকারপুত্রকে নয়, নৌকায় ভোট দেবেন মুক্তিযোদ্ধারা। তবে এটি খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে বিল্লালের জন্যে আলাদা কোনও প্রত্যয়ন দেওয়া হয়নি। বরং পাঁচজনের যে তালিকা ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল, বিল্লালের নাম ছিল তিন নম্বরে, তার নামের পাশে মন্তব্য কলামে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিখেছিলেন- তার পিতা পিচ কমিটির সভাপতি ও ভাই আল বদর কমিটির ইউনিয়ন কমান্ডার ছিলেন। ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ ও ২০২০ সালে উপজেলা পরিষদ উপ-নির্বাচনে বিল্লাল নৌকার বিপক্ষে জোরালোভাবে ভোট করেছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয়। লিখিত বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের আবেদন- বিল্লালের মতো কুলাঙ্গারের হাত থেকে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতীক নৌকাকে রক্ষা করুন। আসন্ন রায়পুর ইউনিয়ন নির্বাচনে দলের ত্যাগী ও নিবেদিত যেকোনো নেতার হাতে নৌকার প্রতীক তুলে দিন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব হোসেন, আব্দুল হাই, আজগর আলী, হাফিজুর রহমান (সাবেক ইউনিয়ন কমান্ডার), হাসান নাসির, উতার আলী, ইরাদত হোসেনসহ মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।