ফুল-চকলেট দিয়ে শিক্ষার্থীদের বরণ করবে ইবি

0

ইবি সংবাদদাতা॥ দীর্ঘ ১৮ মাস পর খুলে দেওয়া হচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হল। শনিবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়া আবাসিক শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারবেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের হলে ওঠার সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ। হল খুলে দেওয়াতে উজ্জীবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। তবে এ আনন্দে বাধ সেধেছে গণরুমের শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে তারা হতাশার কথা জানিয়েছেন।
দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রাবেয়া খাতুন রিনি বলেন, হল খোলার আনন্দ যেন ঈদের আনন্দের মতো। অনেকদিন পর সেই চিরচেনা হল, রুমের সান্নিধ্যে যাবো। বান্ধবীদের সঙ্গে আবার দেখা হবে। সবমিলিয়ে ভালো লাগছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থী এনায়েত ফয়সাল বলেন, হল জীবনের অনুভূতিই অন্যরকম। আবার সেই অনুভূতিতে ফিরে যাচ্ছি। এদিকে গণরুমের শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিকভাবে হলে উঠতে নির্দেশনা না থাকায় তারা বিপাকে পড়েছেন। বেশি বিপাকে পড়েছেন ছাত্রীরা। ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে ১৫ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে আবাসন সুবিধা পান ২৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। হলগুলোতে আসন সংকটের কারণে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী গণরুমে থাকেন। তারা হল কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই গণরুমে ফ্লোরিং বা ডাবিং করে অবস্থান করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে তারা শনিবার হলে উঠতে পারবেন না।
দেশরত্ম শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী অনন্যা বলেন, আমরা গণরুমে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান করি। অনেকের এক বা দুই ডোজ টিকা নেওেয়া হয়ে গেছে। কিন্তু প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে রুমে উঠতে পারছি না। ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী মেসগুলোতে নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়েই থাকতে হচ্ছে। এদিকে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, শনিবার থেকে হলে খুলে দেওয়া হলেও ঝোপঝাড়ে পূর্ণ আবাসিক হলগুলোর আশপাশ। এসব ঝোপঝাড়ে সাপের উপদ্রবও রয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হল খোলার আগে তড়িঘড়ি করে সংস্কার কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। এতদিন সংস্কার কাজ না করে হল খোলার সময় কাজ শুরু করায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, হল সংস্কারে গত জুনে ইউজিসি থেকে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পায় ইবি। এর মধ্যে আটটি আবাসিক হল সংস্কারে বরাদ্দ পায় এক কোটি ৩৫ লাখ টাকা। কাজের পরিধি ভেদে দুই থেকে প্রায় ২৭ লাখ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ পেয়েছে হলগুলো। তবে তিন মাস পার হলেও কাজ শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মুন্সি শহিদ উদ্দীন মোহাম্মাদ তারেক বলেন, গত ৬ অক্টোবর থেকে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। সার্বিক কাজ শেষ হতে আরও এক মাস সময় লেগে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল বলেন, শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ছে। তাদের শরীরের তাপমাত্রা মেপে হলে প্রবেশ করানো হবে। তিনি বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর রুম পরিষ্কারসহ পুরা হল পরিষ্কার করতে আমরা অতিরিক্ত লোকবল রেখেছি। রুমগুলোর কোনায় কোনায় কার্বলিক অ্যাসিড দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের ফুল, চকলেট ও মাস্ক দিয়ে বরণ করে নেওয়া হবে। গণরুমের বিষয়ে জানতে চাইলে রেবা মণ্ডল বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা না থাকায় আমরা এ মুহূর্তে তাদের হলে উঠাতে পারছি না। আমরা হলে ওঠা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের গতিবিধি লক্ষ্য করে অন্তত এক সপ্তাহ পর প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভা ডেকে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবো।