রিমান্ড মানে মারধর বা অন্য কিছু না, জিজ্ঞাসাবাদ : আদালত

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ মুফতি কাজী ইব্রাহিমকে উদ্যেশ্য করে আদালত বলেন, রিমান্ড মানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জিজ্ঞাসাবাদ করবে। যা জিজ্ঞাসাবাদ করে ঠিকমত তার উত্তর দিতে হবে। রিমান্ড মানে মারধর করবে বা অন্য কিছু করবে এমন না। এ বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। রিমান্ড মানে ভয়ভীতির কিছু নয়। আদালতের এমন কথার জবাবে মুফতি কাজী ইব্রাহীম আদালতকে একটি হাত উচিয়ে দেখান এবং বলেন তার এই হাতে ব্যথা। রিমান্ডের আগেই তিনি মার খেয়েছেন।
এদিকে, আদালত মুফতি কাজী ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলায় মুফতি কাজী ইব্রাহিমের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন বলেন, মুফতি ইব্রাহীম একজন ইসলামি বক্তা। আমি নিজেও মাঝে মাঝে উনার বক্তব্য শুনি। যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম এ দেশে বসবাস করে, তাই আলেমদের এখানে সম্মান করা হয়। সেই সুযোগ নিয়ে মুফতি ইব্রাহীম বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছেন। এর পেছনে কারা জড়িত তা বের করতে তদন্ত কর্মকর্তার প্রার্থিত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আর্জি জানাচ্ছি।
এ সময় কাজী ইব্রাহীম আদালতকে বলেন, তৎকালীন মিশর সরকার হযরত ইউসুফ (আ.) কে শাসক হিসেবে নিজেই দায়িত্ব দেন। আমার থিম ও স্বপ্ন হলো বাংলাদেশের সরকারও একসময় এমন কোনও একজন আলেম বা যোগ্য লোককে এই দেশের দায়িত্ব দেবেন। শাসক ও আলেম মিলে দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, সরকার বা শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দেইনি; বরং তাদের পক্ষেই কথা বলেছি। আদালত সূত্র জানায়, রিমান্ড আবেদনের শুনানির সময় আদালতে এক পর্যায়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন মুফতি কাজী ইব্রাহিম। মুফতি ইব্রাহিমকে উদ্যেশ্য করে আদালত বলেন, রিমান্ড মানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জিজ্ঞাসাবাদ করবে। যা জিজ্ঞাসাবাদ করে ঠিকমত তার উত্তর দিতে হবে। রিমান্ড মানে মারধর করবে বা অন্য কিছু করবে এমন না। এ বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। রিমান্ড মানে ভয়ভীতির কিছু নয়। আদালতের এমন কথার জবাবে মুফতি ইব্রাহীম আদালতকে একটি হাত উচিয়ে দেখান এবং বলেন তার এই হাতে ব্যথা। রিমান্ডের আগেই তিনি মার খেয়েছেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এই সরকারের আমলে গত ১০ বছরে আমাদের ২-৩ হাজার মানুষকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ড শেষে দেখা গেছে অনেকে ঠিকমতো হাঁটতে পারে না। তার রিমান্ড বাতিলের প্রার্থনা করছি। এরপর আদালত কাজী ইব্রাহিমের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। যেহেতু কাজী ইব্রাহীম আলেম মানুষ। সেহেতু তাকে ভদ্রতার সঙ্গে আনা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন আদালত।