কোভিড নিয়ন্ত্রণে সমন্বয়হীনতা: সংসদীয় কমিটির অসন্তোষ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনার টিকাসহ সার্বিক কোভিড ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। অপর্যাপ্ত টিকার সংগ্রহ নিয়ে গণটিকার আয়োজন, কঠোর লকডাউন চলাকালে হঠাৎ করে পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া, শহর ও গ্রামাঞ্চলে ভিন্ন ধরনের টিকা কার্যক্রম পরিচালনাসহ নানা বিষয়ে অব্যস্থাপনার কথা জানিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। তবে, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটির সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘সংসদীয় কমিটিতে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। গণটিকা নিয়ে কথা হয়েছে। দেশের মানুষ ১৭ কোটি। কিন্তু এক কোটি টিকার সংগ্রহ নিয়ে গণটিকার ঘোষণা কী করে সম্ভব? এ ধরনের কার্যক্রম সরকারকে বিব্রত করে।’ কমিটির একজন সদস্যের বক্তব্যের সূত্র ধরে ওই সদস্য আরও জানান, গণটিকা চালুর ফলে অনেকে কেন্দ্রে গিয়ে তাৎক্ষণিক টিকা পেয়েছেন। কিন্তু আগে যারা টিকার রেজিস্ট্রেশন করেছেন তারা স্বল্পতার কারণে টিকা পাচ্ছেন না। আগে রেজিস্ট্রেশন করেও তারা বঞ্চিত হলেন। জানা গেছে, বৈঠকে মডার্নার টিকা শহর অঞ্চলে এবং গ্রামে সিনোফার্মের টিকা দেওয়ায় কমিটির সদস্যরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এতে করে মানুষের মধ্যে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে যে, মডার্নার টিকা বেশি কার্যকর এবং সিনোফার্মের টিকার গুণগতমান কম। মানুষের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছে যে, তারা ভালো টিকা পেলো না। এলাকাভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত কোথা থেকে এসেছে কমিটি সেই প্রশ্নও তুলেছে। অবশ্য এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
বৈঠকে কঠোর লকডাউন চলাকালে কোনও ধরনের আগাম ঘোষণা ছাড়াই পোশাক খারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও সংসদীয় কমিটি প্রশ্ন তুলেছে। এ সময়ে টিকা ছাড়া বের হতে না পারা এবং পোশাক কারখানা খোলা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেক হকের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা হয় বৈঠকে। এর আগের বৈঠকে কমিটির সদস্য আ ফ ম রুহুল হক তার নির্বাচনি এলাকা সাতক্ষীরার কোভিড নিয়ন্ত্রণে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তোলেন। তিনি অভিযোগ করেন, কোভিড মোকাবিলায় জেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য বিভাগকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ওই বৈঠকে কমিটির সভাপতি স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়কে সমন্বয় বাড়ানোর পরামর্শ দেন। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘চিন্তার কিছু নেই। যেসব সমস্যা রয়েছে তা অচিরেই ঠিক হয়ে যাবে।’ বৈঠকে পরীক্ষা ছাড়াই চিকিৎসক নিয়োগের সরকারি সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, নিয়োগের একটি বিধিবিধান রয়েছে। কোনও ধরনের পরীক্ষা ছাড়া নিয়োগ দেওয়া হলে এসব বিধিবিধানের ব্যত্যয় ঘটবে। মুক্তিযুদ্ধের পর যেসব মুক্তিযোদ্ধাদের প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন কর্মে নিয়োগ করা হয়েছিল। সেখানেও পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। কমিটিতে বলা হয়, জরুরি প্রয়োজনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা যেতে পারে, কিন্তু চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য অবশ্যই পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকা উচিত।