রাঙ্গামাটির পর্যটন খাতে সাড়ে চার মাসে ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে তা থেকে বাদ পড়েনি পার্বত্য জনপদের পর্যটন শিল্পও। সাড়ে চার মাস ধরে একেবারেই বন্ধ রয়েছে রাঙ্গামাটির পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো। এতে ক্ষতির মুখে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সাড়ে চার মাসে স্থানীয় হোটেল-মোটেল, বিনোদন কেন্দ্র, পর্যটনকেন্দ্র, ট্যুরিস্ট বোর্ডসহ বিভিন্ন খাতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে খাত সংশ্লিষ্টরা। শহরের যান্ত্রিকতা ছেড়ে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসতেন পাহাড় ও হ্রদে ঘেরা মনোরম প্রকৃতির লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে। তাদের পদচারণায় মুখর থাকতো পাহাড়ি এই জনপদ। রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের জন্য দেখার মতো রয়েছে সাজেক ভ্যালি, ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই লেক, পলওয়ে পার্ক, আরণ্যক ও সুবলং ঝর্ণাসহ আরও অনেক দর্শনীয় স্থান। কিন্তু করোনায় বন্ধ রয়েছে সব। রাঙ্গামাটি পর্যটন ট্যুরিস্টবোট ঘাটের ইজারাদার মো. রমজান আলী বলেন, গত বছর থেকে বোর্ড মালিক ও চালকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। মাঝখানে কিছুদিন পর্যটক আসলেও এ বছরের ১ এপ্রিল থেকে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র আবারও বন্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। আমাদের ঘাটে প্রায় শতাধিক ট্যুরিস্টবোট রয়েছে। পর্যটক থাকলে প্রতি বোর্ডে মাসে প্রায় দুই লাখ টাকার মতো আয় হতো। এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত হিসাব করলে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া বিভিন্ন ঘাটে আরও দুই শতাধিক টুরিস্ট বোট রয়েছে। রাঙ্গামাটি আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ইমতিয়াজ সিদ্দিক (আসাদ) জানান, এভাবে চলতে থাকলে ঋণের কারণে হোটেল ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। এই বর্ষা মৌসুমে পর্যটক পদচারণায় মুখর থাকতো প্রকৃতির লীলাভূমি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতে। গত পাঁচ মাস পর্যটন স্পট বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ রাখা হয়েছে সব হোটেল-মোটেল। সব মিলে এই সময়ে হোটেল-মোটেলগুলোতে ক্ষতি প্রায় ৫ কোটি টাকা। পর্যটনের সব সেক্টর মিলে করোনাকালে ২৫-৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। রাঙ্গামাটির অন্যতম আকর্ষণীয় বিনোদনকেন্দ্র শহরের পলওয়েল পার্কও পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে। কাপ্তাই হ্রদের পাশে এটির অবস্থান এবং ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে এখানে একটি ‘লাভ পয়েন্ট’ রয়েছে। যা দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় করেন। পলওয়েল পার্কের কর্মীরা জানান, প্রতি শুক্রবার ও বন্ধের দিনে পর্যটকদের ভিড় থাকে সবচেয়ে বেশি। প্রতি মাসে ২ থেকে আড়াই কোটি টাকা আয় হতো। সেই হিসেবে বন্ধ থাকায় গত ৫ মাসে ৯ থেকে ১০ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে তারা। রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, প্রতি মাসে অফিস স্টাফদের বেতন ও রক্ষণাবেক্ষণ যে খরচ হচ্ছে তা দেয়ার সামর্থ্য নেই আমাদের। পরিস্থিতি ভালো থাকার সময় প্রতি মাসে ২৫-৩০ লাখ টাকার মতো আয় হতো। কোনো কোনো মাসে আরও বেশি হতো। এছাড়া সাজেক ও কাপ্তাইসহ বিভিন্ন স্থানে পর্যটকদের ভ্রমণ বন্ধ থাকায় পর্যটন খাতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।