চৌগাছায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

0

চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা॥ যশোরের চৌগাছায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১ টায় উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের (মুক্তদহ-জগদীশপুর) বিশ^নাথপুরে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রভাব খাটিয়ে অন্যের জমি থেকে জোর করে প্রথমে ড্রেজার মেশিন দিয়ে এবং পরে লেবার দিয়ে বালু উত্তোলন করার অভিযোগে ঘটনাস্থলেই এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা। এর আগে একই অভিযোগে উপজেলা ভূমি অফিসে অভিযোগ করেন তারা। এরপর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিনে স্থান পরিদর্শন করে বালু উত্তোল বন্ধের নির্দেশ দেন। কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ ছিলও। সম্প্রতি আবারও বালু উত্তোলন শুরু করেছেন অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু নামে এক ব্যক্তি। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হায়দার আলী। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্ষতিগ্রস্থ সাখাওয়াত হোসেন, তার বৃদ্ধ মা, স্ত্রী, ভাই, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযুদ্ধা ডা. নূর হোসেনসহ ভুক্তভোগীর প্রতিবেশিরা। লিখিত বক্তব্যে বলা হয় সাখাওয়াত হোসেন ও তার তিন ভাই, তাদের পিতা নজরুল ইসলামের জমিতে পাকা বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছেন। গত এক বছর আগে জগদীশপুর মৌজায় তার পৈত্রিক জমি থেকে একই গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু জবর দখল করে বালু উত্তোলন করে বিক্রি শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ও জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিচার শালিসে মিমাংসার চেষ্টা করি। সেখানে ব্যর্থ হয়ে থানা পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করি। এসিল্যান্ড ঘটনাস্থলে সরেজমিনে এসে বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দেন। এতে কিছু দিন বালু উত্তোলন বন্ধ থাকে। সম্প্রতি পিন্টু আবারও বালু উত্তোলন শুরু করেছেন। এতে আমার বসত বাড়িসহ-দুটি সড়ক ধসে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।
আরো বলা হয় আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু যে জমিতে পুকুর খননের নামে বালু উত্তোলন করছেন সেটি ৫২ শতকের। ওই জমির পূর্ব ও পশ্চিম পাশ দিয়ে দুটি সরকারি রাস্তা রয়েছে। পূর্ব পাশের রাস্তাটি ৭৪ শতক জমিতে। রাস্তার জমির অর্ধেকেরও বেশি আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু জবর দখল করে বালু তুলে গভীর গর্তের সৃষ্টি করেছেন। তাছাড়া আমাদের জমি দখল করে তিনি বালু তুলছেন। তার বালু তোলার কারণে আমার বাড়ির পাশের জমির পাশাপাশি গর্তের পূর্ব পাশের ফসলি জমিতেও ধস শুরু হয়েছে। এছাড়া সরকারি রাস্তা দখল করে বালু উত্তোলন করায় স্থানীয়দের ফসলি জমিতে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু জোর করেই পুকুর তৈরির নামে প্রতিদিন ২০/৩০ গাড়ি (ট্রাক) বালু তুলে বিক্রি করছেন। এতে চৌগাছা (মুক্তদহ) জগদীশপুর পাকা সড়কটি যে কোনো সময় ধসে যেতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে বিষয়টিতে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আহবান করা হয়। উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূর হোসেন, হায়দার আলী, সাখাওয়াত হোসেন ও তাদের প্রতিবেশিরা জানান, আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু দাবি করে থাকেন তিনি সাখাওয়াতের ফুফুর নিকট থেকে কিছু জমি কিনেছেন। কিন্ত শালিসের সময় পিন্টু কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসেন আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু। তিনি দাবি করেন এই জমি তার কেনা। এখানে তার ১২৭ শতক জমি রয়েছে। তিনি নিজের জমিতে পুকুর খনন করছেন। তিনি বলেন, ড্রেজার দিয়ে বা মেশিন দিয়ে বালু তোলা নিষেধ। শ্রমিক দিয়ে তো নিষেধ নয়। আমি শ্রমিক দিয়ে আমার পুকুরের নিচের অংশ সমান করছি।