তালার মাগুরায় জেলা প্রশাসকের নাম ব্যবহার করে চলছে অবৈধ গরুর হাট!

0

শেখ মাসুদ হোসেন, সাতক্ষীরা॥ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের নামে চলছে তালায় মাগুরা বাজারে কথিত গরুর হাট। স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা অন্যের ব্যক্তিগত জমিতে গরু হাট বসিয়ে এক বিঘার বেশি জমি জবর দখলের চেষ্টা করছে এমন অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা দেবাশীষ মুখাজী এ অপচেষ্টার সাথে জড়িত। সরকারী কোন অনুমোদন ছাড়াই ব্যক্তি মালিকানাধীন রেকডিও জমিতে গরু হাটের নামে স্থানীয় ওই নেতা জমির মালিকে হয়রানী করছে এমন অভিযোগ রয়েছে। কথিত গরু হাট সরাতে হলে জমির মালিককে দিতে হবে মোটা অংকের টাকা এমন দাবীও করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী কতিপয় ব্যক্তি। এদিকে রেকডিও জমিতে অবৈধ গরু হাট বন্ধের জন্য জমির মালিক শেখ আব্দুল্লা আল মাসুম তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করে প্রতিকার চেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছেন তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তারেক সুলতান।
অভিযোগে জানাগেছে, তালা উপজেলার মাগুরা বাজার সংলগ্ন ১০ শতক জমি স্থানীয় আমানুর রহমান ২০০০ সালের ২৩ সেপ্টম্বর সাতক্ষীরা তৎকালিন জেলা প্রশাসক বরাবর দানপত্র মুলে দলিল করে দেন। যার দলিল নং ৩৪০৩। জমিটি ছিল বিরোধপূর্ণ। আমানুর তার স্বত্ববিহীন ওই জমি স্থানীয় কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতার প্রচারনায় গরু হাটের নামে জেলা প্রশাসকের নিকট লিখে দিলেও তা প্রকৃত পক্ষে আমানুরের নয়। এমনকি জেলা প্রশাসকের অনুকুলে ওই জমি দলিল করে দেয়ার সময় জেলা প্রশাসন বা উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়নি। ২০০০ সালে ঈদুল আযহা উপলক্ষে এক দিনের জন্য অস্থায়ী গরুর হাট বসানো হলেও এখন সেখানে অন্যেও জমি জবর দখলের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি নিয়ে ২৪ আগষ্ট ২০২০ সালে তৎকালিন তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) খন্দকার রবিউল ইসলাম অবৈধ ভাবে পশুর হাট অপসারনদের জন্য নির্দশ দেন। কিন্ত অদ্যবদি পশুর হাটের জন্য বসানো বাশের খুটি বেড়া সরানো হয়নি। বরং সেখানে স্থায়ী ভাবে এক দিনের জন্য পশুর হাটের জন্য বসানো বাঁশের বেড়া ও খুঁটি রেখে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা দেবামীর্ষ মুখার্জী গরু হাটের নামে প্রায় ৩০ শতকের বেশি জমি জবর দখলে রেখেছেন। দেবাশীষ জানান, তিনি গরু হাটের সভাপতি। আমানুর শেখ জেলা প্রশাসকের নামে ১০ শতক জমি দানপত্র করে দিয়েছেন। সেই জমিসহ বিরোধপূর্ন আরও বেশকিছু জমিতে তিনি গরু হাট বানিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে শেখ আমানুর রহমান পৈত্রিক সুত্রে ৮১ শতক জমির মালিক হলেও এ পর্যন্ত ১৯৮৫ সালের ১ জানুয়ারী জনৈক এস এম শাহাবুদ্দিনের নামে ১৯ এবং ৩৩ শতক জমি বিক্রির মধ্য দিয়ে এ পর্যন্ত ১‘শ ৪৪ শতক জমির বেশী জমি বিক্রি ও দানপত্রমুলে দলিল করে দিয়েছেন। যাহা তার প্রাপ্ত নহে। শেখ আমানুর জেলা প্রশাসকের নামে যে জমি দানপত্র করে দিয়েছেন গরু হাটের জন্য এর আগেই আরও ১০ দলিলের মাধ্যমে তার পৈত্রিক সুত্রেপ্রাপ্ত সব সম্পদ অণ্যনামে রেজি: করে দিয়েছেন। যদিও আমানুর শেখের দাবী তার নামে থাকা জমি জেলা প্রশাসকের নামে দিয়েছেন। তালা উপজেলার মাগুরা গ্রামের মৃত আব্দুল গফ্ফার শেখের ছেলে আমানুর রহমান দলিল লেখক হওয়ার সুযোগে সাবরেজিষ্টি অফিসের সাথে ভাল সম্পর্ক হওয়ায় একের পর কাগজপত্র নয় ছয় করে তার নামে পৈত্রিক সুত্রে থাকা জমির থেকে অতিরিক্ত জমি বিক্রি ও দানপত্র করে দিয়ে এলাকায় বিরোধ সৃষ্টি করে চলেছেন। বিষয়টি নিয়ে তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার তারেক সুলতান জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এর ফলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিফ-উল ইসলাম জানান, মাগুরা বাজারে সরকারী ভাবে কোন পশুর হাট নাই। যদি কেউ সরকারী নীতিমালার বাইরে অবৈধ পশুর হাট বসানোর চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।