উল্লম্ফনের বাজারে ধসে পড়ল বীমা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সোমবার দেশের শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন হলেও বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে এক প্রকার ধস নেমেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত ৫১ বীমা কোম্পানির মধ্যে ৪৩টিরই শেয়ারের দাম কমেছে।এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের শেয়ারবাজারে ব্যাপক আলোচনায় রয়েছে বীমা খাতের কোম্পানিগুলো। কারসাজির মাধ্যমে কিছু বীমা কোম্পানির শেয়ারের দাম ৪-৫ গুণ বাড়ানো হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার ঘটনা ঘটে গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরেই। অধিক মুনাফার আশায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ সেই অস্বাভাবিক দামে শেয়ার কেনে। এরপর দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের মধ্যে পড়েন অনেকে।
তবে চলতি বছরের এপ্রিলে আবারও বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। এ সময়ও কিছু বিনিয়োগকারী ফের বীমা কোম্পানির শেয়ার কেনেন। অধিক মুনাফার আশায় এ দফায়ও বীমার শেয়ার কেনা বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে ব্যাপক দরপতন দেখা যায়। এই খাতের তালিকাভুক্ত ৫১টি কোম্পানির মধ্যে ১০টির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে কমে ৪১টির।
চলতি সপ্তাহেও বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে ধস নামার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। সোমবার (২ আগস্ট) মাত্র সাতটি বীমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৩টির। আর একটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বীমা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামে ধস নামলেও অন্যান্য খাতগুলো দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে। ফলে রীতিমত উল্লম্ফন হয়েছে শেয়ারবাজারে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ২৩২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৮টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৪৮১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৩৪৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ১১ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪১২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্য সূচকের উত্থানের সঙ্গে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। বাজারটিতে ২১ কার্যদিবস পর দুই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এতে প্রায় দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ১৮৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। যা গত ১০ জুনের পর সর্বোচ্চ। গত ১০ জুন ডিএসইতে দুই হাজার ৬৬৯ কোটি ২৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়।
বড় অঙ্কের এই লেনদেনের দিনে টাকার পরিমাণে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাইফ পাওয়ার টেকের ৫৮ কোটি ১০ লাখ টাকার লেনদেন হয়। ৫৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।এছাড়াও ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জিপিএইচ ইস্পাত, ফু-ওয়াং সিরামিক, এস এস স্টিল, সিলকো ফার্মাসিউটিক্যাল, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, পিপলস ইনস্যুরেন্স এবং ফার কেমিক্যাল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২২৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৩ কোটি চার লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৩১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৯টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।