যশোরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী বিষে হত্যারহস্য উদঘাটনের পরও চার্জশিট দেয়নি পুলিশ

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী আমিনুর রহমান বিষে হত্যার রহস্য উদঘাটনের পরও আদালতে চার্জশিট দাখিলে পুলিশের বিলম্ব নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তাও এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না। আর চার্জশিট দাখিল না হওয়ায় মামলার এজাহারভুক্ত ৫ আসামি যাদের হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততা পায়নি বলে দাবি করছে পুলিশ, তারা ও তাদের পরিবারের লোকজন চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
সাড়ে সাত মাস আগে ২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর বিকেলে শহরের আরবপুর মোড়ে বালি উত্তোলন ও চাঁদা দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন আলোচিত সন্ত্রাসী বিষে। তিনি আরবপুর তালপট্টির মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে। হত্যার ঘটনায় একইদিন রাতে ৬ জনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন নিহতের ছোটভাই শুভ হাওলাদার। আসামিরা হলেন-সদর উপজেলার বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের দুই ছেলে সাগর হোসেন (২৮) ও মো. আকাশ (২৫), আনছার আলীর ছেলে তরিকুল ইসলাম (২৯), শামসুদ্দিনের ছেলে নাঈম হোসেন (২৭), ওয়াহিদের ছেলে রুবেল (২৮) এবং শহরের পুরাতন কসবার মৃত সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ফেরদাউস হোসেনস ওরফে সোমরাজ (৪১)। হত্যাকান্ডের পর জড়িত সন্দেহে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়ার লাল মিয়ার ছেলে নাসির হোসেন, আব্দুল কাদেরের ছেলে রাকিব হোসেন ও লাল বাবুর ছেলে আসিফ আহমেদ ওরফে ওয়াসিফকে আটক করে। এই তিন জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দিও প্রদান করেন। তাদের জবানবন্দি থেকে প্রকাশ পায় যে, হত্যা মিশনে তারা ছাড়াও আরবপুর এলাকার গন্নাকাটা (ঠোঁটকাটা) নাঈম ও এজাহারভুক্ত আসামি সাগর অংশ নিয়েছিলেন। পরে এজাহারভুক্ত আসামি সাগর পুলিশের হাতে আটক হন। আদালতে দেয়া তারও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে একই তথ্য প্রকাশ পায়। এছাড়া সাগরের জবানবন্দিতে হুকুমদাতা হিসেবে আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম ও আলোচিত সন্ত্রাসী সাইদুজ্জামান বাবু ওরফে দাঁতাল বাবুর নাম প্রকাশ পায়। কিন্তু আটক ৪ জনের কারও জবানবন্দিতে হত্যাকা-ে জড়িত হিসেবে মামলার এজাহারভুক্ত বাকি ৫ আসামি আকাশ, তরিকুল ইসলাম, ফেরদাউস হোসেন, নাঈম হোসেন ও রুবেলের নাম প্রকাশ পায়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই সেকেন্দার আবু জাফর ওই সময় জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তে এজাহারভুক্ত সাগর বাদে অন্য আসামিদের হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষ হলে মামলার চার্জশিট দেয়া হবে।
এদিকে সন্ত্রাসী বিষে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং কারা হত্যার সাথে জড়িত তাদের নাম প্রকাশ পাওয়া সত্বেও এখনো পর্যন্ত আদালতে চার্জশিট দাখিল হয়নি। হত্যাকাণ্ডের সাড়ে ৭ মাস পার হয়ে গেলেও চার্জশিট দাখিলে পুলিশের বিলম্বে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। চার্জশিট দাখিল না হওয়ার কারণে হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততা না পাওয়া এজাহারভুক্ত ৫ আসামি আকাশ, তরিকুল ইসলাম, ফেরদাউস হোসেন, নাঈম হোসেন ও রুবেল উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই সেকেন্দার আবু জাফরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।