যশোরের বিশিষ্টজন আলী আকবরের জীবনাবসান

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের বিশিষ্ট সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব যশোর মিনিবাস ও বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর ইন্তিকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। আলী আকবরের মৃত্যুতে যশোরের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শোক জানিয়েছেন।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৭৮ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে ৩ মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। শনিবার বাদ এশা শহরের খালধার রোড এলাকায় তার বাসভবনের সামনে নামাজে জানাজা শেষে কারবালা কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।
আলী আকবরের বড় ছেলে নাট্য অভিনেতা আব্দুর রহমান কিনা বলেন, তার বাবা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, হার্টের রোগী ছিলেন। কুরবানির ঈদের আগে তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে তারা জানতে পারেন। এরপর রাজধানীর মহাখালীতে ইমপাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ওই হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। আইসিউতে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শনিবার সকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পরপরই তার লাশ নিয়ে যশোরে নিয়ে আসা হয়।
মরহুমের ভাইপো শামীম আকতার বলেন, ঢাকা থেকে তার মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স শনিবার সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ি বাঘারপাড়ার বন্দবিলা ইউনিয়নের প্রেমচারা গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছু সময় তাকে শেষবারের মতো গ্রামবাসীর দেখার সুযোগ করে দেওয়ার পর যশোর শহরের খালধার রোডের বাসভবনে নিয়ে আসা হয়। এসময় সেখানে যশোরের সামাজিক, রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বাদএশা খালধার রোড বাসার সামনে নামাজে জানাজা শেষে শহরের কারবালা কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজায় বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেন।
আলী আকবর জীবদ্দশায় বহু সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি একদিকে যেমন সাংস্কৃতিক, নাট্য ব্যক্তিত্ব ও খেলোয়াড় ছিলেন তেমনি ব্যবসায়ী হিসেবে সমৃদ্ধ ছিলেন। বিশেষ করে পরিবহন জগতে তার অবস্থান ছিলো অত্যন্ত সুদৃঢ়। তিনি বাংলাদেশ বাস মালিক সমিতির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। এ ছাড়াও যশোর জেলা মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি, জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, জেলা পুলিশিং সমন্বয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। এর বাইরে যশোর ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও একাধিক পদে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করেন। এখানে তিনি সহসভাপতি নাট্য সম্পাদক ও ক্লাব সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহসভাপতি œ পদে দায়িত্বপালন করেন তিনি। এর বাইরে যশোরের একজন স্বনামধন্য ফুটবল ও ভলিবল খেলোয়াড় হিসেবে তার ব্যাপক পরিচিতি ছিলো।
তার মৃত্যুতে যশোরের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ শোক জানিয়েছেন। শোক জানিয়েছেন, জাসদের কার্যকরী সদস্য ও যশোর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট রবিউল আলম, সাধারণ সম্পাদক অশোক রায়, যশোর ইনস্টিটিউটের সাধাররণ সম্পাদক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ। শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন যশোর মিনিবাস ও বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অসীম কুন্ডু, যশোর জেলা সড়ক ও পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি পবিত্র কাপুড়িয়া, যশোর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হারুনর রশিদ ফুলু, জামায়াতে ইসলামী যশোর সাংগঠনিক জেলার আমীর অধ্যাপক গোলাম রসুল, সাবেক জেলা আমীর অধ্যাপক আব্দুর রশিদ ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা অঞ্চলের পরিচালক ইদ্রিস আলী। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ মরহুমের আত্মার শান্তি কামনাসহ তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
আরও বিবৃতি দিয়েছেন বিবর্তন যশোরের সভাপতি সভাপতি নওরোজ আলম খান চপল ও সাধারণ সম্পাদক দীপংকর বিশ^াসসহ সংগঠনের সকল সদস্য।