দেশে চালের দাম সঙ্কটে সীমিত আয়ের মানুষ

0

আগে যেখানে দেশে দুই কোটি ৪২ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল, সেখানে করোনার প্রভাবে নতুন করে আরো দুই কোটি ৪৫ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়েছে। একাধিক পরিসংখ্যান বলছে, দেশে এখন ৪০ শতাংশ মানুষই অর্থনৈতিকভাবে দরিদ্র হয়ে পড়েছে। কিন্তু নতুন করে দরিদ্র হওয়া মানুষকে নিয়ে সরকারের কোনো দৃশ্যমান পরিকল্পনা নেই। উপরন্তু সরকার এটি স্বীকারই করতে চায় না। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্যসামদ্রীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে স্বস্তি না থাকায় সীমিত আয়ের মানুষ সঙ্কটে পড়েছে; যা ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে তাদের জীবন আরো দুর্বিষহ করে তুলেছে। উপায়ান্তর না দেখে তারা সস্তায় চাল পেতে সরকারি দোকানে ভিড় করছে, কিন্তু সরকারের এ কার্যক্রম প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
দেশের প্রধান খাদ্যপণ্য চালের দাম ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের মধ্যে বাংলাদেশেই এখন সর্বোচ্চ। জাতিসঙ্ঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সর্বশেষ রিপোর্ট এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দৈনিক খাদ্যশস্য প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই সব দেশে চালের দাম কমেছে। বাংলাদেশ মোটা চাল আমদানি করলে প্রতি কেজি দাম পড়বে ৩৩-৪০ টাকার মধ্যে, যা দেশের বর্তমান বাজারদরের চেয়ে অনেক কম। এই মুহূর্তে দেশে মোটা চালের কেজি ৫০ টাকা ছুঁয়েছে। উল্লেখ্য, দেশে গত বছর চালের দাম বেশ চড়া ছিল। এবার তার চেয়েও বেশি। অথচ দেশে বোরো মওসুমে চালের উৎপাদন ভালো হয়েছে। সরকারি গুদামে মজুদ বেড়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও দাম কমতির দিকে। তবু দেশে চালের বাজার চড়া।
সাধারণত ধান উৎপাদনে যা ব্যয় হয়েছে, তাতে চালের দাম এত বেশি হওয়ার কথা নয়। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বাজারে অনেক নতুন ফড়িয়া ব্যবসায়ী যুক্ত হয়ে ধান মজুদ করছেন। তারা ধান ও চালের দাম ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিচ্ছেন। সরকারের উচিত দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া। সেই সাথে দেশে আবারো দ্রুত চাল আমদানি করা। দ্রুত খোলাবাজারে চাল বিক্রি কার্যক্রমের পরিসর বিস্তৃত করা। পাশাপাশি সরবরাহ বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া। তা না হলে সাধারণ মানুষের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ কমে যেতে পারে। দেখা দিতে পারে অপুষ্টি।