খাদ্য সহায়তা পেয়েও আর্তি যশোরের ব্যাটারিচালিত রিকসাচালকদের

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোর শহরের ব্যাটারিচালিত রিকসা চালক ইমরান হোসেন খাদ্য সামগ্রির পরিবর্তে অসুস্থ মায়ের ওষুধ কেনার জন্যে ৩০০ টাকা চেয়ে প্রশাসনের কাছে মিনতি করছিলেন। তার রিকসাটি আটকে রেখে তাকে দেয়া হয়েছে ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল ও ২ লিটার সোয়াবিন তেল। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঈদগাহ মোড়ের ঘটনা এটি।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানে রিকসাগুলো থামিয়ে ঈদগাহের মধ্যে রেখে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন চালকদের।
শহরের বারান্দীপাড়ার বাসিন্দা রিকসাচালক ইমরান বলছিলেন, স্যার আমার চাল, ডাল, তেল লাগবে না। আমার অসুস্থ মায়ের ওষুধ কেনার জন্যে ৩০০ টাকা দেন। আমি ওষুধ কেনার টাকা জোগাড় করতে রিকসা নিয়ে বেরিয়েছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওষুধ ছাড়াই চাল, ডাল, তেল নিয়ে তাকে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। ইমরানের মত প্রায় অর্ধশত রিকসাচালককে তাদের রিকসা আটকে রেখে দেয়া হয় উল্লিখিত খাদ্য সামগ্রী।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়মুজ্জামানের নেতৃত্বে মোট নয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়েছেন, বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চালানো এই অভিযানে ৪৭টি ব্যাটারিচালিত রিকসা এবং একটি মোটরভ্যান ও একটি ইজিবাইক জব্দ করা হয়। জব্দকৃত প্রতিটি রিকসা চালকের নাম ঠিকানা ও মোবাইল ফোন নম্বর লিখে রাখা হয়। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঘোষিত লকডাউন শেষ হলে প্রত্যেকের রিকসা ফেরত দেয়া হবে বলে তাদেরকে জানানো হয়।
পরে জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান, এসে জব্দকৃত প্রত্যেক রিকশাচালকের হাতে খাদ্যের প্যাকেট তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দ্দার, সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন প্রমুখ।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান আরও বলেন, মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে। রিকসা চলাচলে শহরে করোনা সংক্রমণ অনেক বেড়ে গেছে। সংক্রমণ ঠেকাতে আমাদের এই উদ্যোগ। আমাদের খাদ্যের কোন অভাব নেই। পর্যাপ্ত খাদ্য আছে। প্রয়োজন পড়লে তাদের আরও খাদ্য সহায়তা দেব। প্রথমদিন আমরা রিকশাচালকদের জন্য খাদ্য সহায়তার অংশ হিসেবে দুই হাজার প্যাকেট প্রস্তুত করে রেখেছিলাম। প্রত্যেক প্যাকেটে, ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল ২ লিটার করে সোয়াবিন তেল আছে।
তিনি আরও জানান,অটো রিকসা ইজিবাইক জব্দ ও উপহার বিতরণ কার্যক্রম প্রতিদিন চলবে।
এদিকে রিকশাচালক শহরের শংকরপুরের বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, যা দেয়া হয়েছে আমার পরিবারের জন্য খুব বেশি উপকার হবে না। কারণ শুধু চাল, ডাল, তেল হলে মানুষের খাওয়া হয়ে যায় না।
এছাড়া গতকাল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৮ জন ইজিবাইকচালক ও ৩৩৩ নম্বরে ফোন করা ১২ জনকে ত্রাণ সহায়তা করা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত জেলা মাজিস্ট্রেট।