চৌগাছায় আম্পানের বৃষ্টিতে ভাঙ্গা সড়ক মেরামত হয়নি, দুর্ভোগে মানুষ

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় সদর থেকে মাশিলা ও কাবিলপুর বাজারে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়কের কিছু অংশ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় মুষলধারে বৃষ্টিপাতে ভেঙ্গে যায়। ভাঙ্গা স্থান দিয়ে মাসের পর মাস পথচারীসহ যানবাহন চলাচলের কারণে ভাঙ্গার পরিধি বেড়েই চলেছে। অনুরূপভাবে মূল সড়কে অন্তত চার কিলোমিটারের পিচ, ইট, খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে গর্তের, ঘটছে দুর্ঘটনা। বর্তমানে ১০ কিলোমিটার রাস্তার ৪ কিলোমিটারই চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এরপরও সংস্কারের কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।
চৌগাছা উপজেলা সদরের দক্ষিণ পশ্চিম কোণে ভারত সীমান্তের গাঁ ঘেষে অবস্থিত মাশিলা ও কাবিলপুর বাজার। উপজেলা সদর থেকে রওনা দিয়ে আঁকাবাকা সড়ক বেয়ে কুঠিপাড়া, হুদাচৌগাছা, দিঘলসিংহ, মশ্মমপুর, সাহাজাদপুর গ্রাম পাড়ি দিয়ে এই বাজার দুটিতে পৌঁছাতে হয়। প্রায় ১০ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে ৪ কিলোমিটারের মত সড়কের চরম বেহালদশা। সড়কটির দিঘলসিংহ মালোপাড়া নামক স্থান হতে মশ্মমপুর মাঠ পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটারের পিচ, ইট খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। ভাঙ্গা সড়কে মাঝে মাঝে ঘটছে দুর্ঘটনা।
এ ছাড়া সড়কটির দিঘলসিংহ মাঠ সংলগ্ন একটি অংশের ভাঙন সৃষ্টি হয়ে তা পাশে আবাদি জমিতে মিশেছে। ২০২০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় মুষল ধারে বৃষ্টিপাতে এই ভাঙনের সৃষ্টি হয় বলে জানান স্থানীয়রা। গত এক বছরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভাঙ্গা স্থান মেরামত করেনি। এই সড়ক দিয়ে সীমান্তের তিনটি বিওপি ক্যাম্পের (শাহাজাদপুর, মাশিলা ও হিজলী) সদস্যরা চলাচল করেন। এ ছাড়া এলাকাটি কৃষিনির্ভর হওয়ার সুবাদে বছরের বার মাসই কোন না কোন ফসল উৎপাদন হয়। সড়ক খারাপ হওয়ায় কৃষক তার পণ্য ঠিক সময়ে বাজারে নিতে পারেন না। না পারার কারণে অনেক সময় কঙ্খিত মূল্য থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিন গেলে দেখা যায়, অনেক কষ্টে সড়কটি ভাঙ্গা স্থান গুলো পার হচ্ছেন নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। এ সময় কথা হয় মশ্মমপুর গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলীর সাথে। তিনি বলেন, রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এলাকার চাষিরা বেশ ক্ষতির মুখে পড়েছে। ভাঙ্গা সড়ক দিয়ে সময় মত মালামাল বাজারে নিতে না পারায় সঠিক মূল্য পাওয়া যাচ্ছেনা। ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, সড়কের যে অবস্থা তাতে মনে হয় এর কোন অভিভাবক নেই। যদি থাকত তাহলে এত দিনে ভাঙ্গা জায়গাগুলো অন্তত মেরামত করা হত। ইজিবাইক চালক আছের আলী বলেন, এক বছর আগে আম্পান ঝড়ের সময় বৃষ্টিতে সড়কটির একাংশ ভেঙ্গে যায়। এ পর্যন্ত ভাঙ্গাস্থান মেরামতের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ভাঙ্গা স্থানে গেলে প্রায় দিনই বাহন নষ্ট হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি আমরা সাধারণ মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা জুল হোসেন, টিপু সুলতান, শাওন হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, উপজেলা সদরে যাতায়াতের জন্য সড়কটি আমাদের একমাত্র মাধ্যম। এক বছর আগে সড়কটি নষ্ট হলেও কর্তৃপক্ষের যেন কোনই মাথা ব্যথা নেই।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কটি মেরামতের জন্য উপজেলা প্রকৌশল অফিসকে ইতোমধ্যে অবহিত করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. মুনছুর আলী জানান, আম্পানের বৃষ্টিতে ভেঙ্গে যাওয়া স্থানে দ্রুতই একটি কালভার্ট বসানো হবে। পাশাপাশি মূল সড়কটি মেরামতের ব্যাপারেও উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।