চৌগাছায় ধান কাটা মৌসুমে শ্রমিক সঙ্কটের আশঙ্কা

0

এম এ রহিম, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় ইরি-বোরো ধান কাটা মৌসুম শুরু হয়েছে। তবে এ মৌসুমে শ্রমিক সঙ্কটের আশঙ্কা রয়েছে।
শুক্রবার চৌগাছা উপজেলার নারায়নপুর, চৌগাছা সদর, সুখপুকুরিয়া, স্বরুপদহ ইউনিয়নসহ পৌর এলাকার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, ধানের শীষগুলো পরিপক্ক রূপ নিলেও পুরো পাকেনি। অনেকে ধান ক্ষেতে এখনও সেচ দিচ্ছেন। পুরোদমে ধান কাটতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে। তবে বৈরী আবহাওয়া ও করোনা প্রাদুর্ভাবে শ্রমিক সঙ্কটের আশঙ্কাও রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে চৌগাছায় ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে। চাষ হয়েছে ১৮ হাজার ৩’শ হেক্টর। যার সম্ভাব্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭৯ হাজার মেট্রিক টন।
এ বছর করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে চলছে লকডাউন। বিশ্ব অর্থনীতির বাজারে চলছে মন্দা। কর্মচঞ্চল মানুষের জীবন হয়ে পড়েছে স্থবির। ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতেও মাটি কামড়িয়ে মাঠে কাজ করছেন কৃষক। কথা হয় চৌগাছা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বেড়গোবিন্দপুর গ্রামের ধান চাষি আলী কদরের সাথে। তিনি বলেন, এ বছরে দেড় বিঘা জমিতে ৬৩ ও ২৮ আগাম জাতের ধান চাষ করেছি। সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে গেল সপ্তাহে ধান কাটা শুরু করেছি। ধানের ফলন বিঘা প্রতি ২০/২৫ মণ হচ্ছে। তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আন্দারকোটা গ্রামের নুর ইসলাম, মহি উদ্দীন, বাঘারদাড়ী গ্রামের হাশেম আলী, আব্দুল জলিল, মাজেদুর রহমান, পৌর এলাকার বেলেমাঠ গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও আফছার আলী গাজীসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, এ বছর লিজ, সেচ, সারসহ ধান উৎপাদন খরচ অন্য বছরের তুলনায় বেশি হয়েছে। এ ছাড়া ধানের ক্ষেতে ইঁদুরসহ পোকামাকড়ের উপদ্রব বেশি ছিল। এদিকে ধানের পূর্ণতা আসার আগেই অতি তাপমাত্রা ও ঝড়ো বাতাসে ধানে চিটার পরিমাণ বেশি হয়েছে। ধানা কাটা শ্রমিক সঙ্কটের আশঙ্কাও রয়েছে। সব মিলিয়ে ১৫/২০ দিন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাষিরা তাদের স্বপ্নের ধান ঘরে তুলতে পারবেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, চৌগাছার কোনো কোনো এলাকায় ধানের পরাগায়নের সময় গরম বাতাসে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে এতে ফলন কম হবে না এবং গড় উৎপাদনে কোন প্রভাব পড়বে না।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, মহামারি করোনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধান কাটা কঠিন হবে। কারণ করোনায় এবারের প্রেক্ষাপট পুরোপুরি ভিন্ন। এবার ধান কাটার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কথাও মাথায় রাখতে হবে। সাধারণত কৃষকরা ধান কাটার সময় একে অন্যের কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এ বছর স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বিপদ হতে পারে। তাই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন বলেন, করোনা মহামারির জন্যই সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সব সময় সাবান বা জীবাণুনাশক দিয়ে বারবার হাত ধোয়ার জন্য পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রত্যেকের জন্য মাস্ক ও গামছা থাকতে হবে। কৃষি যন্ত্রপাতি ও উপকরণগুলো ব্যবহারের আগে ও পরে ভালোভাবে জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।