বিজিএমইএ নির্বাচন: এক প্রতিদ্বন্দ্বী জোটে ভাঙন

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) আসন্ন নির্বাচন আগামী ৪ এপ্রিল ঢাকা ও চট্টগ্রামে একযোগে হবে। এরই মধ্যে তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী জোট ‘ফোরাম’-এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি সমিতির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকসহ অন্তত সাতজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ‘ফোরাম’ ছেড়ে ‘সম্মিলিত পরিষদ’-এ যোগ দিয়েছেন। অন্যদিকে, নতুন জোট ‘স্বাধীনতা পরিষদ’ প্রার্থী সংকটে আছে। ফলে, এবারের নির্বাচনে সম্মিলিত পরিষদের প্রভাব বেশি বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
তবে ফোরামের প্যানেল লিডার এবিএম সামসুদ্দিন দাবি করেছেন, তার জোটে কোনো জটিলতা বা সমস্যা হয়নি। ফোরাম থেকে কেউ অন্য গ্রুপে যোগ দিয়েছেন বলে তার জানা নেই। নির্বাচনে তারা পূর্ণ প্যানেলে অংশ নেবেন।
জানা গেছে, বিজিএমইএ’র বর্তমান পরিচালক অ্যাডাম অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদুল হক মুকুল তার সাবেক নির্বাচনী জোট ‘ফোরাম’ ছেড়ে সম্মিলিত পরিষদে যোগ দিয়েছেন। তিনি গত ২০১৯-২০২১ নির্বাচনে ১ হাজার ২০৭ ভোট পেয়ে ফোরাম থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১ হাজার ৯৫৬ জন। তাদের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ১ হাজার ৪৯২ জন। ভোট বাতিল হয়েছে ৯৯টি। ভোট পড়ার হার ছিল ৭৬ দশমিক ২৭ শতাংশ।
ফোরাম ছাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মো. শহীদুল হক মুকুল বলেন, ‘ফোরাম ছেড়েছি, এটি সত্য। এ নিয়ে কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হয়নি। ফোরামের আগের অবস্থা নেই। শুধু আমি কেন, আমার অনেক ফলোয়ার (অনুসারী) আছেন, তারাও ফোরাম ছাড়ছেন। ফোরাম কারও ব্যক্তিগত স্বার্থে গড়ে উঠেনি। বর্তমানে ফোরাম তৈরি পোশাকের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে বলে মনে করছি না। বিজিএমইএ দেশ ও তৈরি পোশাকের স্বার্থে কাজ করবে। এটাই ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট নেতাদের প্রত্যাশা।’
বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি এবং আসন্ন নির্বাচনে ‘পরিষদ’র চিফ ইলেকশন কো-অর্ডিনেটর আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘ফোরামে ভাঙন নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তা ঠিক। যারা ২৫ থেকে ৩০ বছর ফোরাম করার পর আমাদের সাথে আসছেন, তাতে বুঝতে হবে, আমাদের প্রতি তাদের আস্থা তৈরি হয়েছে। যারা বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্বে ছিল, তারা সঠিকভাবে পালন করতে পারেনি, এটা তারা বুঝতে পেরেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ফোরাম ছেড়েছেন, তারা বিজিএমইএর ভালো উদ্যোক্তা। তারা ফোরামের ভালো লিডার। আমি মনে করি, অবশ্যই তারা ফোরামের বড় সম্পদ ছিলেন। অতীতের নির্বাচনে এসব নেতার জন্যই ফোরাম শক্তিশালী ছিল। সে হিসেবে আমি বলতে পারি, এবার তারা কিছুটা হলেও দুর্বল হবেন।’
সর্বশেষ ২০১৩ সালে সাধারণ সদস্যদের সরাসরি ভোটে বিজিএমইএ’র পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচিত হয়। ওই বছর সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক শিল্প সমালোচনা ও নানামুখী সংকটের মুখে পড়ে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০১৫ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দুই প্রতিদ্বন্দ্বী জোট সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ভিত্তিতে ওই বছর ২২ সেপ্টেম্বর সম্মিলিত পরিষদের নেতা সিদ্দিকুর রহমানকে সভাপতি করা হয়। একই চুক্তির আলোকে ২০১৯ সালে ফোরাম নেতা রুবানা হককে সভাপতি করা হয়। তবে ফোরাম লিডার হিসেবে রুবানা হকের আবির্ভাবে জোটটিতে ভাঙন দেখা দেয়। ওই নির্বাচনে স্বাধীনতা পরিষদের আত্মপ্রকাশ ঘটে।