লেবানন থেকে ফেরাতে হচ্ছে ১০ হাজার বাংলাদেশিকে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ লেবাননে কর্মহীন হয়ে পড়া কমপক্ষে ১০ হাজার বাংলাদেশিকে জরুরি ভিত্তিতে দেশে ফেরাতে হচ্ছে। সরকারি উদ্যোগেই তাদের ফেরানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে তাদের ফেরানোর ব্যয়ভার অর্থাৎ টিকিটের মূল্য (প্রত্যেকের ন্যূনতম ৪০০ ডলার) কে পরিশোধ করবে সরকার না ভুক্তভোগী- সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিশেষ করে অনিবন্ধিত কর্মী যারা প্রিমিয়ামের অর্থ জমা করেনি তাদের টিকিটের মূল্য পরিশোধে জোর আপত্তি তুলেছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে গতকাল এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। বিতর্কও কম হয়নি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নীতি-নির্ধারকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, কোন্‌ কর্মী আর্থিক সহায়তা পাবেন বা পাবেন না এ বিষয়ে কেস বাই কেস পর্যালোচনা হবে। রাষ্ট্রদূত বিষয়টি সমন্বয় করবেন এবং তিনি এ নিয়ে সুপারিশ করবেন।
তার মতামতের আলোকেই পরবর্তীতে প্রণোদনা সংক্রান্ত সাবসিডি বা ভর্তুকির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র মতে, ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত ওই সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথমত: দেশে ফিরতে উদ্‌গ্রীব বাংলাদেশি কর্মীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করবে বৈরুতস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। সেখানে স্বতন্ত্র ফর্মে প্রত্যাবাসনে ইচ্ছুক প্রত্যেক কর্মীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হবে এবং তা ভেরিফিকেশনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে। সেই তালিকা এবং তথ্যাদি পাওয়ার পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিমান ভাড়া করা হবে। চার্টার্ড বিমানেই তাদের ফেরানো হবে। তালিকাভুক্ত বাংলাদেশিদের মধ্যে যাদের মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ছিল তাদের জন্য ডাটা প্রিজার্ভ করা আছে। তাদের বাংলাদেশ দূতাবাস সরাসরি ট্রাভেল পারমিট বা টিপি ইস্যু করতে পারবে। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে অবশ্যই ঢাকার ক্লিয়ারেন্সের জন্য দূতাবাসকে অপেক্ষা করতে হবে। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ তাদের বিষয়ে তদন্ত করবে এবং প্রত্যেকের বিষয়ে রিপোর্ট করবে। পুলিশের ছাড়পত্র সাপেক্ষে দূতাবাস তাদের টিপি ইস্যু করবে। তবে টিপি যে ফরমেটেই ইস্যু হোক না কেন অবশ্যই প্রত্যেক কর্মীকে বিধি মোতাবেক কোভিডমুক্ত সার্টিফিকেট অথবা টেস্ট নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে। উল্লেখ্য, করোনাকালে লেবানিজ পাউন্ডের দর অস্বাভাবিকভাবে পড়ে যাওয়ায় (মূল্যস্ফীতি) দেশটিতে থাকা প্রায় দেড় লাখ বাংলাদেশির বেশির ভাগের আয়-রোজগারে টান পড়েছে। পরিস্থিতি এমন যে তাদের অনেকের ঘর ভাড়া আর খাওয়ার খরচ নির্বাহই দুরূহ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সাম্প্রতিক সময়ে ১৪টি বিশেষ ফ্লাইটে (চার্টার্ড করা) প্রায় ৭০০০ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। তাদের দেখানো পথে হাঁটছেন আরো অন্তত ১০-১৫ হাজার, যারা ফেরার জন্য প্রায় প্রতিদিনই দূতাবাসে ধরনা দিচ্ছেন।