সমুদ্রের নোনা জলে পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রাস উৎসব পালন

0

মোংলা (বাগেরহাট) সংবাদদাতা ॥ রোববার রাতভর পূজা অর্চনা-আরাধনা ও ধর্মীয় নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে সোমবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সমুদ্রের নোনা জলে পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাস উৎসব পালিত হয়েছে। এই রাস পূর্ণিমাকে ঘিরে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সুন্দরবন সংলগ্ন সাগারপাড়ের দুবলার চরের আলোর কোলে জড়ো হয় হিন্দু ধর্মাবলম্বী হাজারও তীর্থ যাত্রী।
বনবিভাগের পাস-পারমিট নিয়ে গত শনিবার নৌকা-ট্রলার ও লঞ্চসহ বিভিন্ন নৌযানে তারা পৌঁছান বঙ্গোপসাগের তীর দুবলার চরে। মোংলা থেকে নৌপথে ১২০ কিলোমিটার দূরের এ দুর্গম এ চরাঞ্চালে প্রতি বছর বাংলা কার্তিক মাসের শেষে বা অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম দিকের ভরা পূর্ণিমার সময় এ রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। সনাতন (হিন্দু) ধর্মাবলম্বীরা এ সময় পূর্ণিমার জোয়ারের লোনা পানিতে স্নান করে তাদের পাপ মোচন হবে এমন বিশ্বাস নিয়ে রাস পূজায় যোগ দিয়ে থাকেন। তবে করোনার সংক্রমন রোধে এ বছর মেলা সাগর পাড়ে কোন মেলা বা উৎসব হয়নি। আর ঐতিহ্যবাহী রাস এ উৎসবে সমাগম ঘটেনি দেশ-বিদেশী অন্য ধর্মাবলম্বী ও দর্শনার্থীদের। এর আগে ২০১৯ সালেও ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সুন্দরবনে রাস পূজা ও পুণ্যস্নান উপলে কোনো মেলা বা উৎসব হয়নি। পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার শর্ত সাপেে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা ও পুণ্যস্নানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। প্রতি বছর অর্ধ লাখ ভক্ত ও পূণ্যার্থী এই উৎসবে অংশগ্রহণ করলেও এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে মাত্র তিন সহ¯্রাধিক পূজারী অংশগ্রহণ করেন। ভক্ত ও দর্শনার্থীরা বিভিন্ন মনোবাসনা মেটাতে মন্দিরে প্রার্থনা করেন। রাসমেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বসু শন্তু বলেন, ‘রাস উৎসব আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে মিশে আছে। প্রতিবছরই আমরা সাড়ম্বরে এই পূজা উদযাপন করে থাকি। এ বছর করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আমরা স্বল্প পরিসরে দুবলার চরের রাস পূজা সম্পন্ন করেছি। এবারের পূজায় শুধুমাত্র সনাতন ধর্মালম্বীরা অংশগ্রহণ করেছেন। আমরা কোনো রকম উৎসবের ব্যবস্থা রাখিনি। শুধুমাত্র ধর্মীয় আরাধনার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সোমবার সকালে পূণ্য স্নানের মাধ্যমে আমরা এবারের রাস পূজা শেষ করেছি।’ এদিকে মোংলার কানাইনগর ও চিলা এলাকায় সোমবার সকালের পশুর নদীর নোনা জলে পূণ্য¯œানসহ নানা আয়োজনে হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বী রাস উৎসব পালন করেন।