চৌগাছায় বায়োফক পদ্ধতিতে কৈ-শিং চাষ করে ভালো লাভের আশা করছেন সোহেল

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছার জনৈক সোহেল হোসেন বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে লাভের আশা করছেন। ইট, বালু, সিমেন্ট দিয়ে তৈরি দুটি ট্যাংকে তিনি ৮০ হাজার কৈ ও শিং মাছের চাষ করেছেন। কোনো সমস্যা না হলে কয়েক লাখ টাকার মাছ বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারণা করছেন তিনি। উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বুন্দলীতলা গ্রামের মৃত মন্টু মিয়ার ছেলে সোহেল হোসেন। পুরাতন মোটরসাইকেল বেচাকেনা ও মেরামত করাই তার মূল পেশা। চলতি বছর বাড়ির উঠানে ৪০ ফুট লম্বা ও ২৬ ফুট চওড়া আর ৪ ফুট উচ্চতার দুটি পাকা ট্যাংক তৈরি করেন। যার এক একটিতে পানি ধারণ ক্ষমতা ১ লাখ ২০ হাজার লিটার। উপজেলা মৎস্য ও যুব উন্নয়ন অফিসের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে তিনি এই কাজ শুরু করেন। ট্যাংক তৈরির পর মটর ও জেনারটের স্থাপন করেন। এরপর দুই ট্যাংকের জন্য কৈ ও শিং দুই জাতের মাছের পোনা সংগ্রহ করেন। প্রতিটি ট্যাংকে ৪০ হাজার করে মোট ৮০ হাজার মাছ ছাড়েন। শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, সোহেল হোসেন ট্যাংকে চাষ করা মাছের খাবার দিচ্ছেন। তিনি জানান, বায়োফক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা খুবই লাভজনক বলে আমি মনে করছি। আমি এখনও মাছ বিক্রি করতে পারিনি, তারপরও যে পরিমাণ খরচ হয়েছে তাতে হিসেব করলে কোনো সমস্যা না হলে ভালো অংকের লাভ হবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি জানান, ট্যাংক তৈরি থেকে শুরু করে মটর, মাছের পোনা কেনা, জেনারেটর, বিদ্যুৎ সব মিলিয়ে তার প্রায় ৩ লাখ খরচ হয়েছে। আর মাত্র তিন মাস পরই তার মাছ বিক্রি করা যাবে।
সোহেল হোসেন জানান, ‘১টি ট্যাংকে পানি আছে ১ লাখ ২০ হাজার লিটার। এই পানিতে আমি ৪০ হাজার মাছ ছেড়েছি। ২ মাস আগে মাছ ছাড়া, এখন প্রতিটি মাছ খাওয়া উপযুক্ত হয়েছে। প্রতি দিন ২ বার সকাল ও সন্ধ্যায় মাছের খাবার দিতে হয়। ৮০ হাজার মাছের জন্য প্রতি দিন তার খাবারে খরচ হচ্ছে ৮ থেকে ৯শ টাকা। পানি, মাছ ও খাবার পরীক্ষার জন্য আলাদা আলাদা যন্ত্রপাতি কেনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, রাত দিন ২৪ ঘন্টার জন্য ট্যাংকের পানিতে অক্্িরজেন দিয়ে রাখতে হয়। নতুন উদ্যোক্তা সোহেল হোসেন বলেন, মাছ বিক্রির উপযোগী হলে ১৮ থেকে ২০টি শিং মাছে ১ কেজি হবে আর ১০ থেকে ১২টি কৈ মাছে হবে ১ কেজি। বাজার দর ভালো হলে শিং ২শ থেকে ২২০ আর কৈ মাছ ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা যাবে। সব মিলিয়ে তিনি বড় ধরনের লাভ হবে বলে আশা করছেন। উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসে দায়িত্বরত মোরশেদ আলম বলেন, সোহেল হোসেন ব্যবসার পাশাপাশি যে কাজটি করেছেন তা অবশ্যই বেকার যুবক যুবতীদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। উপজেলা মৎস্য অফিসার এএসএম শাহাজান সিরাজ বলেন, সোহেল হোসেন যে পদ্ধতিতে মাছ চাষ করেছেন তা এ অঞ্চলে নতুন। আমরা সরেজমিন দেখেছি, নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এই নতুন উদ্যোক্তাকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি।