আন্তর্জাতিক সংবাদ

0

গত সপ্তাহে ইরানে হামলার উপায় খুঁজছিলেন ট্রাম্প
লোকসমাজ ডেস্ক॥ ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করতে দেশটিতে হামলা করতে চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে উপদেষ্টাদের কাছ থেকে সায় না মেলায় পিছিয়ে আসেন তিনি। মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে গত সপ্তাহে ইরানে হামলা কথা বিবেচনা করেছিলেন তিনি। সোমবার মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি বেরিয়ে আসে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে ট্রাম্প ইরানে হামলা চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে উপদেষ্টারা তাকে সতর্ক করেন যে, এমন পদপে বড় ধরনের সংঘাত তৈরি করতে পারে। অন্তত চারজন বর্তমান ও প্রাক্তন মার্কিন কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, ইরানের পারমাণবিক পদার্থের মজুদ বৃদ্ধির ঘটনায় উপদেষ্টাদের নিয়ে এ বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন (আইএইএ) জানায় যে, ইরান ১২ গুণ বেশি ইউরেনিয়াম মজুদ করছে। নিউইয়র্ক টাইমসকে ওই চার সূত্র বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার শীর্ষ উপদেষ্টাদের কাছ থেকে ট্রাম্প জানতে চান, কী উপায়ে এ হামলা চালানো যায় এবং এর প্রতিক্রিয়া কীভাবে মোকাবিলা করা যায়।’ প্রতিবেদনটিতে বলা হচ্ছে, ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতানজে এ হামলা চালানোর বিবেচনা করা হয়েছিল। যদিও ইরান দাবি করে, শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য তাদের এ পরমাণু কর্মসূচি। তবে এ হামলার সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়টি ট্রাম্পের কাছে তুলে ধরেন তার উপদেষ্টারা। তাদের মধ্যে ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। পুরো বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র পরবর্তীতে জানাচ্ছেন, ট্রাম্প ইরানের অবকাঠামো এবং তাদের মিত্রদের ওপর হামলা চালানোর উপায় খুঁজছেন এখনো। ইরাকে শিয়া মিলিশিয়াদের ওপরও সেই হামলা হতে পারে। মার্কিন নির্বাচনে হেরে মতার শেষ সময়ে এসে পৌঁছেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমন মুহূর্তে ইরানের ওপর প্রকাশ্য বা গোপন কোনো অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রতিরা মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় নিরাপত্তার অন্যান্য সংস্থাগুলোও। এদিকে এক প্রতিক্রিয়ায় ইরান সরকারের এক মুখপাত্র আলি রাবিয়ি জানান, ইরানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদেেপর দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।

সাজার মুখে উহানে করোনার খবর দেয়া সাংবাদিক
লোকসমাজ ডেস্ক॥ নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে সংবাদ দেয়া এক সাংবাদিককে সাজা দিতে যাচ্ছে চীন। সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, ওই নারী সাংবাদিকের পাঁচ বছরের জেল হতে পারে। বিবিসির খবর। দেশটির হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে গোটা বিশ্বে প্রাণঘাতী করোনা ছড়িয়ে পড়েছিল। শুরুতে ভাইরাসটি সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ও চিকিৎসক বেইজিংয়ের রোষানলে পড়েন। তাদের মধ্যে একজন ৩৭ বছর বয়সী ঝাং ঝান। সাবেক এ আইনজীবীকে মে মাসে গ্রেফতার করে চীনা পুলিশ। জনসাধারণের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করা এবং বিশৃঙ্খলা তৈরি করার নিরাপত্তামূলক একটি চীনা আইনে বিচার করা হচ্ছে তার। এতে ঝাংয়ের পাঁচ বছর সাজা হতে পারে। উহানে করোনা সংক্রান্ত খবর দিতে গিয়ে তার মতো আরও তিন সাংবাদিকের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাদের একজন লি জেহুয়া এপ্রিলে প্রকাশ্যে এসে জানান, এতদিন তিনি কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। আরেক সাংবাদিক চেন কুইশিকেও সরকারি নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। তৃতীয়জন ফাঙ্গ বিন সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি।

৩৭০ ধারা বিলোপের পর কাশ্মিরে প্রথম ভোট
লোকসমাজ ডেস্ক॥ ৩৭০ ধারা বিলোপের পর এই প্রথম নির্বাচন হতে যাচ্ছে কাশ্মিরে। ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের ২৮০ সদস্য নির্বাচিত করবেন ভোটদাতারা। জেলাস্তরের নির্বাচন। কিন্তু জম্মু ও কাশ্মিরে আগামী ২৮ নভেম্বরের এই নির্বাচন ঘিরেই তৈরি হয়েছে প্রবল কৌতূহল। কারণ, এটাই হবে মাস পনেরো আগে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর প্রথম কোনো নির্বাচন। আর এই নির্বাচনে প্রতিটি আসনে একদিকে আছে বিজেপি, অন্যদিকে বিরোধী জোট, যার মধ্যে ওমর আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্স, মেহবুবা মুফতির পিডিপি এবং কাশ্মিরের অন্য দলগুলি আছে। কংগ্রেস তাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছে। গুপকর জোটের ঘোষিত অবস্থান হলো, তারা ৩৭০ ধারা বিলোপের বিরোধী। এ বারের এই নির্বাচন শুধু যে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর প্রথম নির্বাচন তাই নয়, আরো কিছু দিক থেকে এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। ৩৭০ ধারা বিলোপর পর কাশ্মিরের নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিরা কেউ প্রায় এক বছর, কেউ তারও বেশি সময় ধরে বন্দি অবস্থায় কাটিয়েছেন। মুক্তি পাওয়ার পর তারা একজোট হয়েছেন। এই প্রথমবার হাত মিলিয়েছেন ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি। তাদের জোটে সিপিএমও আছে। তারা ৩৭০ ধারা বিলোপের বিরুদ্ধে এবং জম্মু ও কাশ্মিরকে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার বিরোধী। জেলার নির্বাচন হলেও সেই বিষয়গুলিই তারা তুলবেন। এমনিতে কাশ্মিরে ৩৭০ ধারা বিলোপ ও দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা নিয়ে মানুষের মনে প্রচণ্ড রাগ রয়েছে। সেই তে এখনো প্রলেপ পড়েনি। তবে গুপকর জোট লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই কারণে যে, তারা না লড়লে বিজেপি প্রার্থীরাই জিতে যেতেন। পঞ্চায়েতের েেত্র তাই হয়েছে। বিরোধী দলগুলি বয়কট করায় বিজেপি প্রার্থীরাই সব আসনে জিতেছে। জেলার েেত্র সেটা হতে দিতে চায়নি গুপকর। কাশ্মিরে এমনিতে খুব কম ভোট পড়ে। দুই-তিন শতাংশের মতো। সেেেত্র গুপকর জোটের প্রার্থীদেরই জয়ের সম্ভাবনা প্রবল।’ দিল্লির সাংবাদিক ও অধিকাররা কর্মী আশিস গুপ্ত জানিয়েছেন, গুপকর লড়ছে বলেই জেলাস্তরের নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আর ৩৭০ ধারা বিলোপের পর প্রথম নির্বাচনে কাশ্মিরিরা কীরকম প্রতিক্রিয়া দেখায় সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। গুপকরের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ছে কংগ্রেস। আর সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি প্রচার শুরু করেছে, কংগ্রেস জাতীয়তাবিরোধী। কারণ, গুপকর জোটের সঙ্গে হাত মেলানো মানেই জাতীয় স্বার্থের বিরোধিতা করা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গুলাম আহমেদ মির বলেছেন, “আমরা গুপকরের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছি। কিন্তু একই কর্মসূচির ভিত্তিতে লড়ব কি না, তাদের জোটে সামিল হয়ে লড়ব কি না, তা এখনো ঠিক হয়নি। হঠাতই ভোটের ঘোষণা হয়েছে। তাই সেই সময় পাওয়া যায়নি।’”প্রথম পর্যায়ের আসনগুলিতে কংগ্রেস নিজের প্রার্থী আলাদাভাবে জানিয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয় পর্বের প্রার্থীর নাম গুপকরের হয়ে ফারুক আবদুল্লা ঘোষণা করেছেন। সেখানে কংগ্রেস প্রার্থীদের নামও আছে। তবে বিজেপি-র প্রচারের পর কংগ্রেস গুপকরের সঙ্গে কীরকম সম্পর্ক রাখবে তা নিয়ে কিঞ্চিত দ্বিধায় ফারুক। আর এই প্রথমবার কাশ্মিরে ভোট দিতে পারবেন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসা উদ্বাস্তুরা। ১৯৪৭ সালে জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় এসেছিলেন এই হিন্দু ও শিখ উদ্বাস্তুরা। কিন্তু ৩৭৯-এর জন্য তারা কখনো ভোট দিতে পারেননি। এবার পারবেন। তাদের সংখ্যা এখন প্রায় চার লাখ। এই সব কারণেই কাশ্মির জেলা কাউন্সিলের ভোটও রীতিমতো গুরুত্বপূর্ণ। পুরো দেশের নজর সে দিকে থাকবে।