চৌগাছার গ্রাম পুলিশের ৩ বছরের বেতন বকেয়া! পরিবার নিয়ে অনটনে কাটছে দিন

0

এম.এ রহিম, চৌগাছা (যশোর)॥ যশোরের চৌগাছা উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের ১শ ৪ জন গ্রাম পুলিশ সদস্যের ২ বছর ৮ মাসের থানা হাজিরার টাকা বকেয়া রয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনটনে দিন কাটছে তাদের । জানা যায়, প্রতি সপ্তাহের সোমবার উপজেলার সকল ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশকে থানায় হাজিরা দিতে হয়। এদিন থানার ওসি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। কোন গ্রাম পুলিশ যেন হাজিরায় অনুপিস্থত না থাকে সে কারণে তাদের বেতনের একটা অংশ এই হাজিরার সাথে দেওয়া হয়।
বর্তমানে প্রতিদিন হাজিরার জন্য তাদেরকে তিন শ টাকা করে দেওয়া হয়। উপজেলা প্রশাসন ভূমি উন্নয়ন কর থেকে আয়ের এক শতাংশ হারে যে টাকা পান সেখান থেকে গ্রাম পুলিশের এই হাজিরার টাকা প্রদান করা হয়। কিন্তু ২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে গ্রাম পুলিশদের হাজিরার টাকা বকেয়া রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রাম পুলিশ জানান, মাসে কমপে চার দিন হাজিরায় একজন গ্রাম পুলিশের মাসে পাওনা হয় ১ হাজার দুইশ টাকা। যে মাসে ৫ দিন সোমবার হয় সে মাসে পাওনা হয় ১ হাজার পাঁচ শ টাকা। প্রতিমাসে কমপে ১ হাজার ২শ টাকা পাওনা হলে ৩২ মাস হিসেবে একজন গ্রাম পুলিশের সর্বনিম্ন পাওনা হয় ৩৮ হাজার ৪শ টাকা। সেই হিসেবে উপজেলার ১শ ৪ জন গ্রাম পুলিশের ৩২ মাসের সর্বনিম্ন বকেয়া বেতনের পরিমাণ কমপে ৩৯ লাখ ৯৩ হাজার ৬শ‘ টাকা। যশোর জেলা শাখার গ্রাম পুলিশ ও কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ স¤পাদক ও চৌগাছা উপজেলা শাখার সভাপিত রেজাউল ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদের টাকা দিয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও আমাদের হাজিরার টাকা বছরের পর বছর বকেয়া রাখা হয়। তিনি আরো বলেন, আমরা সারাদিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যানের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করি আবার রাতে থানা পুলিশের সাথে কাজ করি, এছাড়া উপজেলা পরিষেদর বিভন্ন নির্দেশনাও আমাদেরকে পালন করেত হয় তারপরও আমাদের বেতন বকেয়া রাখা হয় যা খুবই দু:খজনক। নাম প্রকাশ না করে একজন গ্রাম পুলিশ বলেন, মাসে বেতন পাই যৎসামান্য। তারপরও বকেয়া থাকে। আমাদের দিয়ে সবাই কাজ করিয়ে নেন। কিন্তু চেয়ারম্যান স্যার, ওসি স্যার, ইউএনও স্যার, ইঞ্জিনিয়ার স্যার কেউ আমাদের খবর রাখেন না। আমরা ছাড়া আর কারও বেতনও বেকয়া থাকে না। এ ব্যাপারে জানেত চাইলে বেতন প্রদান কমিটির উপজেলা সদস্য সচিব ও চৌগাছা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মতিন বলেন, কত বাকি আছে তা তিনি জানেন না তবে, ৩২ মাস বকেয়া থাকার কথা না। তার জানামতে এক জনের ২ বছরের বাকি ছিল তিনি নিয়ে গেছেন। তবে বিষয়টি খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন। এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, বকেয়া বেতনের বিষয়টি গ্রাম পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয়েছে। করোনার কারণে জমি রেজিস্ট্রি কম হওয়ায় ফান্ডে টাকা জমা নেই। ফলে তাদের নিয়মিত মাসিক বেতন দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে ফান্ডে টাকা পেলে থানা হাজিরার বকেয়া দেওয়া হবে।