চৌগাছায় অবৈধভাবে বালি উত্তোলন হুমকির মুখে ফসলি জমি, বসতবাড়ি

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় প্রভাবশালী মহলের অবৈধ বালি উত্তলোনের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে সড়ক, ফসলি জমি এমনকি বসতবাড়ি। বছরের পর বছর অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। বালি উত্তোলনের কারণে এক সময়ের সমতল ভূমি আজ জলাকারে পরিণত হয়েছে। চৌগাছা উপজেলার পাতিবিলা ও হাকিমপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী পাতিবিলার মাঠ থেকে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি বছরের পর বছর অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে আসছেন। মাটির নিচ হতে বালি তোলার কারণে পাতিবিলা মাঠের মধ্যে চৌগাছা-কোটচাঁদপুর প্রধান সড়কের পূর্ব পাশে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল বিশাল জলাকার। প্রশাসন মাঝে মধ্যে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে আর্থিক জরিমানাসহ বালি উত্তোলনের সরঞ্জাম নষ্ট করলেও বন্ধ হচ্ছে না বালি তোলার কাজ। মেইন সড়কের পাশ দিয়ে বালি উত্তোলনের কারণে সম্প্রতি সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট ভাঙন দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী ভাঙন স্থানে লাল কাপড় বা গাছ-গাছালি দিয়ে পথচারীদের সতর্ক করছেন। ভাঙন যদি এখনই মেরামত করা না হয় তাহলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন পথচারীসহ এলাকাবাসী।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পাতিবিলা গ্রামের মৃত শামছুল বিশ^াসের ছেলে আব্দুস সালাম, সাবেক ইউপি মেম্বার বাদল হোসেন, আশারেফ হোসেন, সাবেক মেম্বার বিশারত হোসেন বিষেসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সাথে জড়িত। তারা নানা কৌশলে বালি তুলে মাঠের বিঘার পর বিঘা সমতল ভূমি পুকুরে পরিণত করেছেন। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ হতে অভিযান চালালে তারা আত্মগোপনে চলে যান। কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার শুরু করা হয় বালি তোলার কাজ। সম্প্রতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে বালি উত্তোলনের সরঞ্জাম আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এর কিছুদিন পর তারা আবার বালি তোলা শুরু করেছেন। এলাকাবাসী জানান, বছরের পর বছর যে পরিমান বালি তোলা হয়েছে তাতে চরম হুমকির মুখে রয়েছে পাশর্^বর্তী গ্রামগুলোর মাঠ ও চৌগাছা-কোটচাঁদপুর সড়ক। ইতিমধ্যে মাঠের অনেক জমি ভেঙ্গে পুকুরে মিশে গেছে, ভাঙনও দেখা দিয়েছে সড়কে। বালি উত্তোলনের সাথে জড়িত আব্দুস সালামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ হতে বিধিনিষেধ থাকায় বালি উত্তোলন অনেকটা কমিয়ে দিয়েছি। সাবেক মেম্বার বাদল হোসেনের পুকুরের পাড় সমান করার জন্য ড্রেজার মেশিন লাগানো হয়েছে। পাড় কাটা হয়ে গেলে কাজ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হবে।’ সাবেক মেম্বার বিশারত হোসেন বিশে বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ হতে অভিযান চালিয়ে আমার বালি তোলার সব সরঞ্জাম নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এরপর হতে আমি বালি তোলা বাদ দিয়েছি।’ জেলা পরিষদের সদস্য দেওয়ান তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘অবৈধভাবে বালি তোলা একটি গুরুতর অপরাধ। গুটি কয়েক ব্যক্তির কারণে সড়ক, বসতবাড়ি ও ফসলি জমি আজ হুমকির মুখে পড়েছে। অবিলম্বে এর প্রতিকার দরকার বলে আমি মনে করছি।’ এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী মো. এনামুল হক বলেন, ‘চৌগাছাতে নতুন এসেছি, খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। যাদের কারণে সরকারি সম্পদসহ বসতবাড়ি মাঠ-ঘাট হুমকির মুখে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’