লোকসমাজ ডেস্ক॥ আংশিকভাবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার কোনও সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গ্রামাঞ্চলে ২৫ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দিতে শিক্ষক ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রস্তাবের পর এই তথ্য জানায় মন্ত্রণালয়। জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে না। আংশিকভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।’ চলতি বছর ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্ত হলে করোনার বিস্তার রোধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য গত ১৭ মার্চ থেকে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে আসলে নতুন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কিভাবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালিত হবে তার একটি নির্দেশিকা প্রস্তুত করে পাঠানো হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে। এছাড়া ১ নভেম্বর থেকে সংপ্তি পাঠ পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা প্রকাশ করেছে জাতীয় প্রাথমিক শিা একাডেমি (নেপ)। সেই হিসেবে অক্টোবর পর্যন্ত শিাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে নভেম্বরেও খোলা হবে না। প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রণালয় জানায়, যতো কিছু করা হোক না কেন করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হবে না। জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, ‘শিার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে শিাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না। যে যাই প্রস্তাব দিক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া শিাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না। ’ সিনিয়র সচিব বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন শীতে করোনা বাড়তে পারে, সেখানে শিাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে এখন কোনও সিদ্ধান্ত নেবো না। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া শিাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে না।’ এর আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছিলেন শিাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে। এরপর থেকে কিছু শিক ও মাঠ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা গ্রাম পর্যায়ের শিাপ্রতিষ্ঠান আংশিক খোলার প্রস্তাব দেন প্রাথমিক ও গণশিা প্রতিমন্ত্রীর কাছে। প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান বিভিন্ন প্রস্তাব আসছে।
এদিকে প্রতিমন্ত্রীকে শিক ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এই প্রস্তাব দেওয়ার পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিা সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কামেস তার ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তোলেন। মো. আবুল কাসেম বলেন, ‘প্রাথমিকে জেলা পর্যায়ে ২৫ শতাংশ স্কুল খুলে দেওয়ার প্রস্তাব মাঠ পর্যায়ের শিক কর্মকর্তাদের এ খবরটি কতটুকু সত্যি বুঝতে পারছি না। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পে মতামত দিয়েছেন বিষয়টি ভাবতেই অবাক লাগছে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, উচ্চবিদ্যালয়, মাদ্রাসা এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, সেখানে আমাদের সম্মানিত শিকগণ কী করে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার পে মতামত দেন। কোমলমতি শিশুদের, তাদেরকে কতটুকু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাতে সম হবে?’ বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব ও সহকারী শিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হবে আত্মঘাতী। যারা খোলার প্রস্তাব দিয়েছেন তারা না বুঝে দিয়েছেন।’