পরমাণু অস্ত্রে ভারতকে জবাব দিবে পাকিস্তান, মন্ত্রীর বক্তব্যে তোলপাড়

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অচলাবস্থার মধ্যে নতুন বোমা ফাটালেন পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী শেখ রাশিদ। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র দিয়ে ভারতকে জবাব দেবে। তবে ভারতের মুসলিমরা যাতে আহত না হন, সে দিকে খেয়াল রাখা হবে। এর আগেও শেখ রাশিদ এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। গত বুধবার পাকিস্তানের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন রাশিদ। সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কের প্রসঙ্গ উঠেছিল। রাশিদ বলেন, ভারতের সঙ্গে স্থলযুদ্ধে যেতে চায় না পাকিস্তান। যুদ্ধ হলে ভারতকে পরমাণু অস্ত্র দিয়ে জবাব দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে রাশিদের বক্তব্য, পাকিস্তানের কাছে ছোট আকারের বেশ কিছু পরমাণু অস্ত্র আছে। যা নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করে ব্যবহার করা সম্ভব। অর্থাৎ, গোটা দেশ নয়, এলাকা ধরে ধরে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে পাকিস্তানের। এবং সেই অস্ত্রেই ভারতকে হারানোর শক্তি রাখে পাকিস্তান। এ প্রসঙ্গেই রাশিদ বলেন, ভারতের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলি যাতে পরমাণু অস্ত্রের হাত থেকে রক্ষা পায়, সেদিকে খেয়াল রাখবে পাকিস্তান। স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ এক মন্ত্রীর এমন বয়ানে আলোড়ন শুরু হয়েছে।
ভারতের কূটনৈতিক মহলে এই মন্তব্যের নিন্দা হয়েছে। তবে সরকারিৎভাবে রাশিদের এই মন্তব্যের কোনও উত্তর এখনো দেওয়া হয়নি।
বালাকোট এবং পরবর্তী সার্জিকাল স্ট্রাইকের সময় থেকেই ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্ক কার্যত তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তা আরও ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে গত বছর ভারত কাশ্মিরের বিশেষ সুবিধার আইন বাতিল করায়। সে সময় কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল দুই দেশের মধ্যে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও সে সময় পরমাণু অস্ত্রের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। তার বক্তব্য ছিল, দুইটি পরমাণু শক্তি যুদ্ধে নামলে তার ফলাফল কী হতে পারে, ভারতের তা মনে রাখা উচিত। পাকিস্তানের সামরিক শক্তি বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই মুহূর্তে পাকিস্তানের কাছে যে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে, তা দিয়ে আসাম পর্যন্ত আক্রমণের ক্ষমতা রয়েছে পাক সেনার। তাদের দাবি, ১২৫ থেকে ২৫০ গ্রাম পর্যন্ত হাইড্রোজেন বোমা রয়েছে পাকিস্তানের হাতে। যা দিয়ে এলাকাভিত্তিক আক্রমণ চালানো যায়।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভারতের সেনাবাহিনীর বহর পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ হলে পাকিস্তান সেনার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হতে পারবে না। আর সামরিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানের পরমাণু প্রথম নীতি রয়েছে। ফলে যুদ্ধ শুরু হলে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে পাকিস্তান কালক্ষেপ করবে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে গোটা ভারতীয় উপমহাদেশে একপ্রকার উত্তেজনা তৈরি হয়ে আছে। চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত সংঘাত চলছে। নেপাল নিজেদের মানচিত্রে বিতর্কিত ভূখণ্ড ঢুকিয়ে উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। কাশ্মির নিয়ে পাকিস্তান লাগাতার অভিযোগ করছে। তারই মধ্যে ইমরান খান নতুন পাকিস্তানের রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করেছেন, যেখানে কাশ্মীর এবং গুজরাটের একাংশ রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের রেলমন্ত্রীর এই হুমকি গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। ডয়চে ভেলে