সিনহা হত্যা : তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৩ জনকে কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি। সোমবার সকাল পৌনে ১১টায় শুরু করে বিকাল পর্যন্ত পৃথকভাবে কক্সবাজার কারাগারে থাকা এসব আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
জেল সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন জানান, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ কারাগারে থাকা ৩ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তদন্ত কমিটি। তবে ৩ জনের জিজ্ঞাসাবাদ আরো বাকি আছে বলে জানান তিনি। বলেন, একজনের জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়েছে। আরেক জনের আংশিক ও অপরজনের জিজ্ঞাসাবাদ এখনো বাকি রয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান, সদস্য হিসেবে আছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জাকির হোসেন, মোহাম্মদ শাজাহান আলী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, কক্সবাজারের টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি সোমবার গণশুনানি করে সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন সংস্থার মোট ৬৯ জনের বক্তব্য নিয়েছিল। গতকাল এ মামলার আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৩ জনকে কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তারা হলেন বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহার হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী, উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত।
অপরাপর আসামি সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মামলার সাক্ষী মো. নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ র‌্যাব’র হেফাজতে রিমান্ডে রয়েছে। এর আগে কক্সবাজারের টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি গতকাল গণশুনানি করে সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন সংস্থার মোট ৬৯ জনের বক্তব্য নিয়েছিল। শুনানিতে ৯ জন সাধারণ মানুষ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারি- বেসরকারি সংস্থার ৬০ জনের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। আগামী ২৩শে আগস্টের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেয়ার আশা করছেন তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান।
গত ৩১শে জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার- টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দু’টি মামলা করে। আর রামু থানায় একটি মামলা করে। পরে ৫ই আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে ৯ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন- টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহার হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী, উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. মোস্তফা ও এসআই টুটুল। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক রয়েছে। এর মধ্যে রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া পুলিশের চার সদস্য এবং এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় তিন সাক্ষীকে গত শুক্রবার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে র‌্যাব। যাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তারা হলেন- সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী মো. নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ।