বন্ধু সেজে সর্বনাশ, অবশেষে ধরা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এক সাথে তারা মাঠে ফুটবল খেলা করতো। সেই সুবাধে বন্ধুত্ব। কিন্তু বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়ে সৌরভ নামে এক কিশোরের সর্বনাশ করলো তার খেলার সহযোগীরা। বন্ধুরা তার পিতার দোকান থেকে কৌশলে হাতিয়ে নেয় ৫ লাখ টাকা। যশোর সদর উপজেলার হাশিমপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। দেড় মাস পর ধরা পড়েছে বন্ধুর বেশে থাকা চোর সোহান মোল্লা (২০)। বৃহস্পতিবার সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। আটক সোহান মোল্লা নড়াইল সদর উপজেলার বাহিরগ্রামের তাহের মোল্লার ছেলে। তবে বর্তমানে যশোর সদর উপজেলার হাশিমপুরে থাকে। জবানবন্দিতে সোহান মোল্লা বলেছে, তার মা ভারতের মুম্বাইয়ে থাকেন। হাশিমপুরে সে এখন মামার সাথে বসবাস করে। সে একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করে। আর অবসর সময়ে হাশিমপুর স্কুল মাঠে খালেদ, তুহিন ও আলমদের সাথে ফুটবল খেলা করে। খালেদ, তুহিন ও আকাশের বাড়ি রাজাপুর গ্রামে। তাদের খেলার কোচ হাশিমপুরের মিন্টু ভাই। মাঝে মধ্যে তাদের সাথে ফুটবল খেলা করতে আসতো হাশিমপুরের তোতা মিয়ার ছেলে সৌরভ। হাশিমপুর বাজারে সৌরভদের একটি দোকান রয়েছে। কোচ মিন্টু ভাইয়ের নেতৃত্বে খালেদ, তুহিন ও আকাশসহ কয়েকজন ওই দোকানে চুরির পরিকল্পনা করে। তারা সুযোগও খুঁজতে থাকে। এরপর ১৯ মে তারা সেই সুযোগ পেয়ে যায়। এদিন সকাল থেকে তারা বাজারে অবস্থান নেয়। এক সময় দেখতে পায় দোকানের ক্যাশে সৌরভ বসে আছে, তার পিতা তোতা মিয়া নেই। এই সুযোগে কোচ মিন্টু গল্প করার ছলে সৌরভকে ডেকে বাইরে নিয়ে যায়। এরই ফাঁকে তুহিন ও খালেদ দোকানের ভেতর ঢুকে ক্যাশবাক্স ভেঙে টাকা চুরি করে। বাইরে পাহারায় ছিলো সে (সোহান), আকাশসহ আরও দুজন। এরপর চুরি শেষে কৌশলে তারা সেখান থেকে সটকে পড়ে। পরে মিন্টু তাকে চুরির টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা দেয়। বাকি টাকা মিন্টুসহ অন্যরা ভাগাভাগি করে নিয়েছে। রাজাপুর গ্রামের মাঠের একটি ভেড়িবাঁধের টংঘরে বসে তারা টাকা ভাগাভাগি করে।
উল্লেখ্য, তোতা মিয়ার হাশিমপুর বাজারে মেসার্স সৌরভ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি রড-সিমেন্টের দোকান ও ধানের আড়ৎ রয়েছে। গত ১৯ মে সকালে অজ্ঞাত চোরেরা কৌশলে দোকানে ঢুকে ক্যাশবাক্স ভেঙে নগদ ৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তোতা মিয়া কোতয়ালি থানায় মামলাও করেছেন। দীর্ঘ দেড় মাস পর বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দোকানে চুরির সাথে জড়িত সোহানকে হাশিমপুর থেকে আটক করে। আটকের পর সে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে চুরির কথা স্বীকার করে। পরে আদালতে সোপর্দ করা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আকরাম হোসেন তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।