শৈলকুপায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে লাভবান হাবিবুর রহমান

0

মফিজুল ইসলাম, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) ॥ চাষি হাবিবুর রহমান। ১০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছেন কৃষি খামার। বিভিন্ন মৌসুমি ফল ও ফসলের চাষ করেন তিনি। তার এ খামারেই রোদ বৃষ্টি ঝড়ে ২০ শতক জমিতে অসময়ে তিনি চাষ করেছেন গ্রীষ্মকালীন তরমুজ। মাচার নিচেই ঝুলছে লাল নেটে বাঁধা কয়েক’শ এই সুস্বাদু ফল। আম্পান ঝড়ে প্রথম আসা ফুল ও কুঁড়ি নষ্ট হলেও তিনি এ তরমুজ চাষে লাভবান বলে জানান। অসময়ের এই তরমুজ তিনি চাষ করেছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপার নবগ্রাম গ্রামে। চাষি হাবিবুর রহমান নবগ্রাম গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে।
অসময়ের তরমুজ চাষি হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি অন্যের জমি লিজ নিয়ে ১০ বিঘা জমিতে দু’বছর আগে একটি সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তোলেন। আধুনিক পদ্ধতির চাষাবাদের জন্য তিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে থাকেন। তরমুজ সাধারণত শীতকালে বীজ রোপন করে বৃষ্টি মৌসুমের আগেই তা শেষ হয়। কিন্ত কৃষি অফিস গত এপ্রিল মাসে তাকে গ্রীস্মকালীন তরমুজ চাষের জন্য উৎসাহিত করেন। তার পরামর্শ অনুযায়ী ২০ শতক জমি তিনি প্রস্তÍত করেন। সেখানে ৫টি বেড তৈরি করে মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে রাখেন মাটির সঠিক আদ্রতা ধরে রাখতে। এরপর ২২ এপ্রিল তিনি হাইব্রিড সোহেলী জাতের তরমুজ বীজ রোপন করেন। রোপনের ৩০/৩৫ দিনের মধ্যে মাচায় উঠে যাওয়া গাছে ব্যাপকভাবে ফুল ও কুঁড়ি চলে আসে। কিন্ত আম্পানে তার অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। তারপরও মাচার ডোগায় ডোগায় ঝুলে আছে ছোট বড় কয়েক’শ তরমুজ। স্বাদও অতুলনীয় বলে তিনি জানান। অসময়ের এ তরমুজের ব্যাপক চাহিদা। তিনি প্রতিটি তরমুজ ৫০/৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন বলে জানান। আম্পানের ক্ষতির পরও তিনি ১৫ শতক জমি থেকে ২০/২৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। তার দেখাদেখি একই এলাকার অনেকেই এ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে জানান হাবিবুর রহমান। রোপনের পর ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে তরমুজ বেচাকেনা শেষ হয়ে যায় বলে তিনি জানান। গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ নিয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোসলেম উদ্দিন তুহিন জানান, এখানকার কৃষকেরা এই তরমুজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। মাঠপর্যায়ে তারা সকল প্রকার পরামর্শ প্রদান করবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, শৈলকুপায় হাবিবুর রহমান নামের এক কৃষক মাচায় অসময়ে তরমুজ চাষ করেছেন। তার চাকুরি জীবনে অসময়ে এ তরমুজ চাষ প্রথম দেখলেন। তরমুজ সাধারণত শীতকালে বীজ রোপন করে বৃষ্টি মৌসুমের আগেই তা শেষ হয়। কিন্তু কৃষক হাবিবুর রহমান বৃষ্টি মৌসুমের মধ্যে মাচা করে তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি কয়েকবার অসময়ের তরমুজের এ খামার পরিদর্শন করেছেন।