কোরবানির হাট নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় জেলা প্রশাসন

0

আকরামুজ্জামান ॥ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেই ভিন্ন পরিস্থিতিতে এবছর অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র ঈদুল আযহা অর্থ্যাৎ কোরবানির ঈদ। এ মাসের (জুলাই) শেষ দিন অথবা আগস্ট মাসের প্রথম দিনে কোরবানির ঈদ অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যশোরে কোরবানি উপলক্ষে পশুর হাট কোন অবস্থায় হবে তা নিয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। সংক্রমণ রোধে অতীতের মতো গতানুগতিকভাবে পশুর হাট বসবে কীনা- বা এ বিষয়ে কোন বিধিনিষেধ থাকবে কিনা সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি যশোর জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশনার অপেক্ষায় তারা। প্রতি বছর কোরবানির ঈদের এক মাস আগ থেকেই জমজমাট হয়ে উঠতে শুরু করে যশোরের পশুর হাট। কিন্তু এবার সম্পূর্ণ চিত্রই উল্টো। যে সময়ে পশু কেনাবেচা চাঙ্গা হওয়ার কথা সে সময় আদৌ হাট বসবে কীনা তা নিয়ে খামারী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে হাপিত্যেশ চলছে। অথচ আর মাত্র ২৭ দিন পরই ঈদুল আজহা। কিন্তু পশুর হাট বসা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় এ নিয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় রয়েছে খামারী ও ব্যবসায়ীরা।
যশোরের বাঘারপাড়ার শেখের বাতান গ্রামের উকিল গাজী বলেন, তিনি একজন গরু ব্যবসায়ী। অন্যান্য বছরে কোরবানির আগে এ সময়টাতে গরু বেচাকেনার জন্য তোড়জোড় শুরু হয়ে যায় আমাদের। কিন্তু করোনার কারণে এবার কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা। আসলে পশুর হাটে কোন পদ্ধতিতে বেচাকেনা হবে সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় তিনি আগেভাগে গরু কিনতে পারছেন না বলে জানান।
একই অবস্থা খামারীদের। তারা বলছেন, কোরবানিতে গরু বিক্রি করবেন ভেবে গত কয়েকমাস ধরে তারা লালন-পালন করেছেন। তবে করোনা মনে হয় তাদের ‘আসল-মুসল’ সবই নিয়ে যাবে। কেননা- কোরবানি উপলে গরুকে সেইভাবে খাওয়া-দাওয়া দিয়ে লালন-পালন করা হয়েছে। কিন্তু করোনার দাপটে এখনও গরু কেনাবেচাই শুরু হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে সামনে গরুর ন্যায্য দাম পাওয়া তো দূরের কথা-পুঁজি সঙ্কট দেখা দেবে বলে তারা আশঙ্কা করেন।
যশোর শহরের বকচর কোল্ড স্টোর মোড় এলাকার গরুর খামারী শহিদুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও আমার খামারে গরু লালন-পালন করা হয়েছে। আশায় বুক বেঁধে আছি কোরবানির উপলক্ষে এসব গরু ভালো দামে বিক্রি করবো। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পশুর হাটের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন না। যেকারণে চিন্তায় রয়েছি আমরা। তিনি বলেন, প্রশাসনের দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসা উচিৎ। এ বিষয়ে যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, পশুর হাটের বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি। তিনি বলেন, আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি এ বিষয়ে একটি নীতিমালা খুব শিগগির এসে পৌঁছাবে। বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় চাচ্ছেন না শহর বা জনাকীর্ণ এলাকায় কোনো পশুর হাট বসুক। এ জন্য নির্দেশনা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। এ বিষয়ে যশোরের বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শফিউল আরিফ বলেন, পশুর হাট নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে একটি গাইড লাইন আসছে। খুল অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ওই নির্দেশনা আমাদের কাছে এসে পৌঁছালে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অতীতের মতো পশুর হাট বসবে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। মনে হয় মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে যৌক্তিক কিছু সিদ্ধান্ত দিতে পারে।