টাউন হল ময়দান-ঈদগাহেই থেকে যেতে হচ্ছে যশোর বড়বাজারের মাছ ও সবজি ব্যবসায়ীদের

0

আকরামুজ্জামান ॥ শেষ পর্যন্ত টাউন হল ময়দান ও ঈদগাহেই থেকে যেতে হচ্ছে যশোর বড়বাজারের মাছ ও সবজি ব্যবসায়ীদের। করোনা সংক্রমণ রোধে গত ২৯ এপ্রিল যশোর জেলা প্রশাসন শহরের বড়বাজারের মাছ ও সবজি বাজার দুটিকে স্থানান্তর করে টাউন হল ময়দান ও ঈদগাহে নিয়ে আসে। কিন্তু নির্ধারিত দুটি বাজারে ব্যবসা পরিচালনার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় ব্যবসায়ীরা গত একমাস ধরে এ নিয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। তারা যশোর পৌর ও জেলা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন আগের স্থানে ফিরে যাবার জন্য। কিন্তু ব্যবসায়ীদের এ আপত্তির পরও পৌর কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছে। ইতোমধ্যে টাউন হল ময়দানে মাছ ব্যবসায়ীদের দোকানের জন্য থ্রিপল টানিয়ে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে। পর্যায়ক্রমে ঈদগাহে ও যশোর রেলস্টেশন বাজারে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে বলে পৌর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে পৌর কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তেও সন্তুষ্ট নন মাছ ও সবজি ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, শুধু থ্রিপল টানিয়ে বসার পরিবেশ করলেই এখানে ব্যবসা করা সম্ভব হবে না। এজন্য তারা যশোর জেলা ও পৌর কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজার দুটিকে স্থানান্তর করার পর থেকে গত দু মাস ধরে তারা নানা সমস্যায় পড়ছেন। খোলা আকাশের নিচে দোকান বসিয়ে রোদ-বৃষ্টিতে মাছ বিক্রি করতে না পেরে অনেক ব্যবসায়ী বাজার দুটিতে বসতে পারেননি। যে কারণে তারা আগের স্থানে ফিরে যাওয়ার জন্যই কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়েছেন। বড়বাজার মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কৃষ্ণপদ বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা টাউন হল ময়দান থেকে পুনরায় আগের স্থানে ফিরে যাওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদের দাবির বিষয়টি কেউই গুরুত্ব দেয়নি। এখন দেখছি পৌর প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাউন হল ময়দানের মাঝখানে থ্রিপল টানিয়ে আমাদের বসার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে। আমি যতটুকু জানি নির্ধারিত স্থানে ৬০টি দোকান বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন বাধ্য হয়েই সেখানে বসতে হবে হয়তো।’ একই কথা বলেন মাছ ব্যবসায়ী এরশাদ আলী। তিনি বলেন, টাউন হল ময়দানে কোনো বাজার বসার পরিবেশ নেই। যতই থ্রিপল টানানো হোক না কেন এখানে ব্যবসার কোনো পরিবেশ নেই। কারণ সামান্য বৃষ্টি হলে কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায় পুরো মাঠ। তিনি বলেন, বাজার স্থানান্তর করা হয়েছে অথচ বড় বাজারে মুরগি ও মাংসের দোকানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মুদি দোকান রয়েছে। যে কারণে অনেক ক্রেতাই এখানে আসতে চান না। এদিকে টাউন হল ময়দানের মাছ বাজারের মত ঈদগাহে সবজি বাজার নিয়েও অসন্তুষ্ট ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে সবজি ব্যবসায়ী সমিতির নেতা কাজী এমদাদুল হক সাবু বলেন, সবজি বাজারের জন্য যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রয়োজন তা ঈদগাহে নেই। এখানে আড়ৎদাররা দাঁড়াতে পারেন না বা বসতে পারেন না। ফলে এ বিষয়ে যশোর পৌর ও জেলা প্রশাসনের পুনর্বিবেচনা করা উচিৎ। তিনি বলেন, পরিবেশ না থাকায় ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী তাদের দোকান উঠিয়ে নিয়ে গেছে। বাকিরাও হতাশায় রয়েছে। এ অবস্থায় পৌর কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে সেখানে রাখার চেষ্টা করলেও চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে এটি নিশ্চিত করে বলতে পারি। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে যশোর এইচএমএম রোডের অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য সুরক্ষার মাধ্যমে পরিচালনা করছেন। প্রশাসন যদি আমাদেরকে এ সুযোগ দেয় তাহলে আমরাও এ বিষয়ে সচেতন থেকে বাজার পরিচালনা করতে পারবো। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য যশোর পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।