ফারাক্কা লংমার্চ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের প্রথম আন্দোলন

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ নদীমাতৃক বাংলাদেশ আজ প্রায় মরুভূমি। বিপর্যয় ঘটেছে পরিবেশের। তার জন্য দায়ী প্রধানত প্রতিবেশী ভারত কর্তৃক বাংলাদেশকে পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করা। তাদের অব্যাহত আগ্রাসনের কারণে পানি নেই। পানিশূন্য আজ পদ্মা। এক সময়ের প্রমত্ত পদ্মা আজ ধু ধু মরুভূমি। এর প্রধান কারণই হচ্ছে ফারাক্কা বলে অভিমত প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ। শুক্রবার (১৫ মে) ১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৪৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, পানির অভাবে ধীরে ধীরে প্রমত্তা পদ্মা হয়ে ওঠে ধু ধু বালুচর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কোটি কোটি মানুষ। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ক্রমান্বয়ে মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। পদ্মা ধীরে ধীরে ধু ধু বালুচর এবং বিরানভূমি হয়ে যাচ্ছে, যা মরুভূমিতে পরিণত হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে। তখনও বাংলাদেশের কিছুসংখ্যক বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদ ফারাক্কার ভয়াবহতা সম্পর্কে উপলব্ধি করতে না পেরেই ফারাক্কার পক্ষে ওকালতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। সেদিন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন। সে কারণেই ফারাক্কা বাঁধের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে অবহিত করতে ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ন্যাপ নেতারা বলেন, ভারত উজানের রাষ্ট্র হিসেবে ভাটির দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে সৎ প্রতিবেশী হিসেবে যে আচরণ প্রত্যাশা করে তা থেকে সবসময়ই বঞ্চিত হয়েছে। ভারতের সঙ্গে গত ৫০ বছরেও পানি সমস্যা সমাধান না হওয়ার কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীর অবহেলা ও ব্যর্থতা। বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীর কেউ জাতিসংঘে ফারাক্কা ইস্যু উত্থাপন করতে ভুলে যায় আবার কেউ দ্বিপাক্ষিক সমাধানের কথা বললেও এ বিষয়ে প্রায়শই নীরবতা অবলম্বন করে। তারা বলেন, ৪৪ বছর আগেই স্বপ্নদ্রষ্টা মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বিশ্ব বিবেককে পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাগ্রত করতে লংমার্চের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এদিন বাংলার সর্বস্তরের মানুষের বজ্রকণ্ঠ ভারতের শাসক মহলেও কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল। যার রেশ উপমহাদেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পৌঁছে যায়।
‘১৯৭৬ সালের এই দিনে আয়োজিত লংমার্চের মূল লক্ষ্য ছিল ফারাক্কা বাঁধ। কিন্তু পদ্মাসহ সব অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে সমস্যা আজও অমীমাংসিত থেকে গেছে।’ ফারাক্কা নিয়ে সম্পাদিত চুক্তিতে শুভঙ্করের ফাঁকি সুস্পষ্ট হলেও এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয় না অভিযোগ করে ন্যাপের ভাষ্য, ‘তিস্তা নিয়ে চুক্তির নামে দীর্ঘমেয়াদি লুকোচুরি খেলা চলছে। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারত তার একতরফা নীতির আওতায় গঙ্গা তথা পদ্মায় যে অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করে সেই বাঁধ বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের জন্য আজ মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এখন সেই ফাঁদ ভারতের জন্যও মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।’ ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের মহানায়ক মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান, সাংগঠনিক প্রধান জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়াসহ সব সংগঠক ও অংশগ্রহণকারী জনতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ন্যাপ নেতারা।